মহিলা ঢাকির দল ঝড় তুলেছে তৃণমূলের প্রচারে

দুর্গাপুরের গরম একটু বেশি, তবু মানিয়ে নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, চাকরির চেষ্টা করছি। তবে চাকরি পেলেও ঢাক বাজানোর কাজটা চালিয়ে যেতে চাই। এটাই আমাকে প্রথম আয়ের পথ দেখিয়েছে।

April 19, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

আট দফায় ম্যারাথন ভোট প্রক্রিয়া চলছে বাংলায়। মাস খানেক ধরে একই ধরনের প্রচারে ভোটারদেরও কান ঝালাপালা। দুর্গাপুরে সপ্তম দফায় ভোট। তৃণমূলের (Trinamool) প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে প্রায় দেড় মাস আগে। সেই থেকে প্রার্থীদের প্রচার চলছে। সেই একঘেঁয়েমি কাটাতেই যেন দেখা মিলল তাঁদের। লাল ফুল হাতা ব্লাউজের সঙ্গে গোলাপি রঙের শাড়ি পরে কাঁধে আস্ত ঢাক ঝুলিয়ে প্রচারের সামনে তাঁরাই। পিছনে দুর্গাপুর পশ্চিমের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। মহিলা ঢাকির ঢাকের শব্দে প্রচারের সুর বাঁধছেন পোড় খাওয়া বিশ্বনাথ। মহিলা ঢাকির দল আগ্রহ বাড়াচ্ছে ভোটারদের মধ্যেও। তাই প্রচারের শেষদিকে এই চমক ভালোভাবেই উপভোগ করছেন শিল্পাঞ্চলের ভোটাররা। ভোটারদের আগ্রহ দেখে মুখের হাসি চাওড়া হচ্ছে ঘাসফুলের প্রার্থীর।

সুনীতা দাস, বছর কুড়ির তরুণী গত বছরই গ্র্যাজুয়েশন পাশ করেছেন। সরকারি চাকরির চেষ্টা করছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের শিক্ষিত সুনীতাই এখন দুর্গাপুরের প্রচার বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণ। সুন্দরী তরুণী সুনীতা নীল কাপড়ে মোড়া ঢাক নিয়ে হাজির হচ্ছেন গোপালমাঠ থেকে স্টেশন বাজার সর্বত্র। তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছেন আরও দু‌ই পড়ুয়া তাপসী দাস ও মিতু দাস। এক গৃহবধূ ঢাকিও রয়েছেন। সবাই এসেছেন মছলন্দপুর থেকেই। একই ড্রেস কোড তাঁদের। তাঁদের ঢাকের ড্যাম কুড়া কুড় বোলেই শিল্পাঞ্চলের মাটিতে তৃণমূলের প্রচারে ঝড় উঠেছে। জানা গিয়েছে, ওই গ্রাম ঢাকিদের গ্রাম। সুনীতার পিসেমশাই ভিন দেশে একটি বিশেষ বাদ্যযন্ত্র কিনতে গিয়ে দেখেন মহিলারা ওখানে সেটা বাজাতে বিশেষ পটু। সুনীতা তখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। ছোট্ট সুনীতাকে দিয়ে ঢাক বাজাতে দিয়ে দেখেন সুন্দর বোল তুলছে। ব্যস এরপর থেকে সুনীতা কাঁধে তুলে নেন ঢাক। এই বয়সেই কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই নানা জায়গায় পাড়ি দিয়েছেন তিনি। সুনীতার থেকে বয়সে ছোট আরও দু’জন রয়েছেন। প্রখর গরমে যখন রোদে হাঁটাই কষ্টকর, তখন কাঁধে ঢাক নিয়ে মাথায় তৃণমূলের টুপি পরে অবলীলায় ঘণ্টাখানেক ঢাক বাজিয়ে হেঁটে চলেছেন তাঁরা। তিনি বলেন, অভাবের সংসার ঢাক বাজিয়েই পড়ার খরচ চালিয়েছি। দুর্গাপুরের গরম একটু বেশি, তবু মানিয়ে নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, চাকরির চেষ্টা করছি। তবে চাকরি পেলেও ঢাক বাজানোর কাজটা চালিয়ে যেতে চাই। এটাই আমাকে প্রথম আয়ের পথ দেখিয়েছে।

ভোটাররাও তাঁদের দেখে বেশ নতুনত্ব পাচ্ছেন। দুর্গাপুরের মানুষ ঢাকি দেখেছেন কিন্তু প্রচারে মহিলা ঢাকিরা (Dhaki) নেচে নেচে বোল তুলছেন, এটা তাঁরা দেখেননি। নতুন প্রজন্মের ভোটাররাও মহিলা ঢাকিদের প্রচারে বেশ উজ্জীবিত। ভোটের প্রচারে ঢাকের শব্দ এনে দিয়েছে উৎসবের টাটকা গন্ধ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen