দুর্গাপুজো ঘিরে ১৮ দফা নির্দেশ: হিন্দুদের উপর অতীত হামলার দায় এড়াতেই কি ইউনূস সরকারের কৌশল?
পটকা ও আতশবাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ, এবং সন্দেহজনক ব্যাগ বা বস্তু নিয়ে প্রবেশে কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮.৩০: চলতি মাসের শেষে বাংলাদেশে শুরু হতে চলেছে দুর্গাপুজো (Bangladesh Durga Puja)। এই উৎসবের আনন্দের আবহে প্রভাব ফেলেছে সাম্প্রতিক অতীতে ঘটে যাওয়া মন্দির-মূর্তি ভাঙচুর, ধর্মীয় নিপীড়ন এবং সংখ্যালঘুদের উপর রেকর্ডসংখ্যক আক্রমণ। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর, নতুন অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের নেতৃত্বে মুহাম্মদ ইউনূস সরকার (Yunus ministry) এবার দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য অশান্তি ঠেকাতে ১৮ দফা নির্দেশিকা জারি করেছে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, দুর্গাপুজোর সময় পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপি বাহিনী টহল দেবে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে এবং প্রয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীও মাঠে নামবে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রতিটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন ভুয়ো খবর বা উসকানিমূলক পোস্ট রুখতে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যবেক্ষণ জোরদার করা হবে। পুজো কমিটিগুলিকে সার্বক্ষণিক পাহারার জন্য স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে বলা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, মনিটরিং কমিটি গঠন, এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় দমকল ও ডুবুরি দল প্রস্তুত রাখতে হবে। বিসর্জনস্থলে আলো ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যেসব প্যান্ডেলের যাতায়াতের রাস্তা অনুপযোগী, সেগুলি সাময়িকভাবে মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্যান্ডেলে ইভটিজিং রোধে তৎপরতা, পটকা ও আতশবাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ, এবং সন্দেহজনক ব্যাগ বা বস্তু নিয়ে প্রবেশে কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিমা তৈরি থেকে বিসর্জন পর্যন্ত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
বিদ্যুৎ, দমকল, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব পরিষেবা সংস্থার যোগাযোগ নম্বর প্যান্ডেলে দৃশ্যমান স্থানে টাঙিয়ে রাখতে হবে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সরকারি ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশের ব্যবস্থাও করতে হবে।
এই নির্দেশিকাগুলি এমন এক সময় জারি হয়েছে, যখন বাংলাদেশে দুর্গাপুজোকে ঘিরে নিরাপত্তা (Security)নিয়ে উদ্বেগ চরমে। ইউনূস সরকার আশ্বাস দিয়েছে, উৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হবে। তবে রাজনৈতিক মহল বলছে, এই নির্দেশিকাই আসলে সরকারের মুখ রক্ষার চেষ্টা, কারণ অতীতের হামলা ও অশান্তির দায় এড়ানো সহজ নয়।