জিয়াগঞ্জের সিংহবাহিনী দুর্গাপুজো: আজও অটুট ২৫৯ বছরের প্রাচীন রীতি

September 19, 2025 | < 1 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:০০: জিয়াগঞ্জে চারদিন ধরে পুজো হয় সিংহবাহিনী মা দুর্গার। পালযুগের কষ্টিপাথরে নির্মিত এই প্রতিমার আরাধনা চলে গত আড়াই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে। মন্দিরে প্রতিদিন নিত্যপূজা হয়, তবে দুর্গাপুজোর চারদিন দেবী বিশেষভাবে দুর্গারূপে পূজিত হন। স্থানীয় মানুষ ছাড়াও জেলার নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা আসেন মনস্কামনা পূরণের আশায়।

 

মন্দিরের নিচের বেদিতে খোদাই করা আছে নির্মাণকাল-১৬৮৮ শকাব্দ (পালি ভাষায়)। ইতিহাসবিদদের মতে, আজ থেকে প্রায় ২৫৯ বছর আগে তৈরি হয়েছিল এই দশভুজা দুর্গামূর্তি। দেবীকে দুর্গার পাশাপাশি কিছুটা ভিন্ন রূপেও দেখা যায়, যা সিংহবাহিনী দেবীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

 

ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক ধ্রুব নাথ রায় জানান, ভাগীরথীর দুধ ঘাট থেকে এক বণিক এই প্রতিমা উদ্ধার করেন প্রায় আড়াই শতক আগে। প্রথমে দেবীর পূজা হত ব্রহ্মময়ী কালী বাড়িতে। পরবর্তীকালে বটু অধিকারীর পরিবার একুশ শতক জমি দান করে মন্দির নির্মাণ করে দেন। তাঁদের উত্তরসূরিরা জমি ট্রাস্টি বোর্ডকে অর্পণ করার পর থেকে এখানেই নিয়মিত পূজা হয়ে আসছে।

 

উৎসবের দিনগুলিতে দেবীকে অন্ন, পোলাও, ভাজা, তরকারি, মিষ্টান্ন দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়। নবমীতে থাকে ইলিশ মাছ সহযোগে বিশেষ ভোগ। প্রতিদিনের ভোগে ঐতিহ্য মেনে পরিবেশিত হয় বকফুলের বড়া।

 

মন্দির ট্রাস্ট কমিটির সদস্যরা জানান, একসময় পশুবলি প্রচলিত থাকলেও এখন তা বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে কুমড়ো বলি হয় প্রতীকীভাবে। পুরোহিত পার্থসারথি পণ্ডিতের কথায়, “পুজোর সময় দেবী সিংহবাহিনী দুর্গারূপে পূজিত হলেও ভক্তরা তাঁকে বিপদতারিনী বা মঙ্গলচণ্ডীর রূপেও আরাধনা করেন।”

 

মন্দিরে রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন, যা তান্ত্রিক আচার অনুযায়ী বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আড়াই শতাব্দীর ঐতিহ্য আজও সমান নিষ্ঠা, বিশ্বাস ও ভক্তির সঙ্গে পালন করে আসছে জিয়াগঞ্জবাসী।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen