এক মাসে SIR আতঙ্কে মৃত্যু ৩৩, আত্মঘাতী ১৮! কাঠগড়ায় কমিশন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:২৫: ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) ঘোষণার পর মাত্র এক মাসে পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। এর মধ্যে আত্মঘাতী হয়েছেন ১৮ জন। অভিযোগ উঠছে, এসআইআরের (SIR) আতঙ্ক এবং কাজের চাপই এই মৃত্যুর নেপথ্যে দায়ী। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন দুই বুথ স্তরের আধিকারিক (BLO)। শাসক দল তৃণমূলের দাবি, কমিশনের কাছে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলেও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
গত ২৮ অক্টোবর বাংলায় এসআইআর চালু হয়। প্রথম দিনেই উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহে প্রদীপ কর নামে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন। ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত এনুমারেশন ফর্ম পূরণ ও জমা দেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে আত্মহত্যা করেছেন ১৮ জন। বাকি ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে হৃদ্রোগ ও ব্রেন স্ট্রোকে। মৃতদের পরিবারগুলির দাবি, আতঙ্ক ও চাপই তাঁদের মৃত্যুর কারণ। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে মুর্শিদাবাদে- ৯ জন। এছাড়া দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হুগলি, দিনাজপুর, হাওড়া ও জলপাইগুড়িতেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (NCRB)-র তথ্য বলছে, নাগরিকত্ব হারানোর ভয় বা ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার আশঙ্কায় আত্মহত্যা নজিরবিহীন। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের আরও ১১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও একসঙ্গে শুরু হয়েছে এসআইআরের কাজ। অন্যান্য রাজ্যেও বিএলও-র মৃত্যুর খবর মিলেছে। তবে বাংলার মতো সাধারণ মানুষের আত্মহত্যার ঘটনা সেখানে নেই।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ঘোষণা করেছেন, দিল্লিতে এসআইআর (SIR) বিরোধী আন্দোলনে নামবে তৃণমূল (TMC)। ইতিমধ্যেই দলের ১০ জন সাংসদকে নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার তৃণমূলের (TMC) প্রতিনিধিদল কমিশনের সদর দপ্তরে গিয়ে ফুল বেঞ্চের সঙ্গে বৈঠক করে। তাঁদের অভিযোগ, কমিশন কোনও প্রশ্নেরই উপযুক্ত জবাব দিতে পারেনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee) এসআইআর স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছেন। ২০ নভেম্বর তিনি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি লিখে বিএলও-দের (BLO) মৃত্যু ও আত্মহত্যার ঘটনা তুলে ধরেন। কমিশনের পাল্টা যুক্তি, ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ভোটারের মধ্যে ৮২.৯১ শতাংশের গণনাপত্র ডিজিটাইজেশন (Digitization) হয়ে গিয়েছে। সময় রয়েছে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কমিশনের দাবি, নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।