রবীন্দ্র সরোবরে মাছেদের মৃত্যুমিছিল রুখতে তরল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করবে পুরসভা
মাস দুয়েক আগেই মরা মাছ ভেসে উঠেছিল কলকাতার রবীন্দ্র সরোবরে। এমনটা প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক বার এমন দৃশ্য দেখা গেছে সরোবরে। বারবারই অভিযোগ উঠেছে, অতি দূষণের কারণে জলে কমে গেছে অক্সিজেন। এবার কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হল, কৃত্রিম ভাবে তরল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হবে রবীন্দ্র সরোবরে।
কেএমডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্য জানান, সরোবরে বারবার এই মাছেদের মৃত্যুমিছিলের ঘটনায় একটি এক্সপার্ট কমিটি তৈরি করা হয়। তাঁরাই খতিয়ে দেখে জানিয়েছেন, কীভাবে জলে অক্সিজেন বাড়ানো যতেে পারে। বহু মাছ এবং পাখির বাসস্থান এই সরোবর। একে রক্ষা করা জরুরি।
অক্টোবরেই রবীন্দ্র সরোবরে ভেসে উঠেছিল ঝাঁকে ঝাঁকে মরা মাছ। আবারও সামনে আসে জলদূষণের অভিযোগ। পরিবেশবিদদের দাবি, অপরিচ্ছন্নতা এবং দূষণের মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যাওয়ার কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। কলকাতা পুরসভা অবস্য পাল্টা জানায়, সরোবরের জল পরিষ্কার রাখতে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তার পরেও কেন এমনটা ঘটেছে, খতিয়ে দেখা হবে।
এর পরেই জলে অক্সিজেন লেভেল বাড়ানোর জন্য কৃত্রিম অক্সিজেন সরবরাহের তিনটি পাম্প সরোবরে বসানো হয়েছিল সঙ্গে সঙ্গে। তবে এ নিয়ে আবার অভিযোগ তুলেছেন খেলোয়াড়রা। সরোবরে যাঁরা রোয়িং করেন, তাঁদের সমস্যা হয় এজন্য। অভিযোগ পেয়েই সেগুলি আবার সরিয়ে দেয় পুরসভা।
এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লেকের পলি সরিয়ে জলস্তর আরও বাড়াতে পারলেও অক্সিজেন লেভেল বাড়বে। অন্তরা আচার্য এ বিষয়ে বলেন, “এটা বহু পুরনো একটা জলাশয়। বহু বছর ধরে পলি পড়েছে। বছরের পর বছর ধরে এখানে নিজস্ব বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছে। কোনও কিছুই এখানে রাতারাতি করে ফেলা যাবে না।”
পরিবেশবিদদের দাবি, রবীন্দ্র সরোবর সংলগ্ন এলাকায় বহু দোকান ও হোটেল রয়েছে। হচ্ছে অনেক কনস্ট্রাকশনের কাজও। সেসব জায়গা থেকে প্রচুর পরিমাণে দূষিত জল এসে মিশতে থাকে লেকের জলে। সেই কারণেই এত মাছ মারা যাচ্ছে। এমনকি রবীন্দ্র সরোবর লেকের জল কালো হয়ে যাওয়ার পিছনেও এই একই কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা।
এই প্রথম নয়। মাস খানেক আগেও রাশি রাশি মরা মাছ ভেসে উঠেছিল সরোবরে। তার আগেও একাধিকবার রবীন্দ্র সরোবরের জলের দূষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রবীন্দ্র সরোবরের জলে কাপড় কাচার অভিযোগও উঠেছিল। শুধু তাই নয়, ফুল, প্লাস্টিক সব অবাধে ফেলা হচ্ছিল বলেও দাবি।
এসব কারণেই বারবার একই ঘটনা ঘটছে এবং হাজার হাজার মাছের মৃত্যু হচ্ছে বলে দাবি পরিবেশবিদদের।