রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

হলদিয়া অগ্নিকাণ্ড – গাফিলতির জন্য আইওসিকে তোপ সৌমেনের

December 23, 2021 | 2 min read

হলদিয়া আইওসি রিফাইনারিতে দুর্ঘটনার কারণ জানতে বুধবার কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়েই তদন্ত শুরু করল। দিনভর বিভিন্ন তদন্তকারী দলের পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। আইওসির সঙ্গে কথাবার্তা বলার পর মৃতদের পরিবারকে ১০লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পর আইওসি কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তোলেন মন্ত্রী। আইওসির মতো একটি রিফাইনারি ক্ষেত্রে এই ধরনের গাফিলতি মানা যায় না বলে তিনি মন্তব্য করেন।এদিন দুপুর নাগাদ দিল্লি থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্তকারী দল হলদিয়া এসে পৌঁছয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে ইতিমধ্যেই তারা টেকনিক্যাল বিষয়গুলি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের ডিরেক্টরেট অব ফ্যাক্টরিজের কেমিক্যাল সেলের ডেপুটি ডিরেক্টর ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার দুই আধিকারিকের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখবে রাজ্য সরকারের উচ্চপর্যায়ের ফরেন্সিক ও এক্সপ্লোসিভ টিম। এদিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিস সুপারের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পুলিসি তদন্ত হয়। আইওসির তরফে এদিন দুপুরে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মৃত ও জখম শ্রমিদের পারিবারকে সমস্ত ধরনের প্রায়োজনীয় সহায়তা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ৩৮জন জখম শ্রমিকের কলকাতায় মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। এদিন আইওসির তরফে মৃত ও জখম শ্রমিকদের নামের তালিকা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও আইএনটিটিইউসির তমলুক জেলার সভাপতি তাপস মাইতির হাতে তুলে দেওয়া হয়। মৃত তিন শ্রমিকের নাম পরগত সিং(৩৯), সরবজিৎ সিং(২৯) ও সামসাদ আলি(৩৫)। প্রথম দু’জনের বাড়ি পাঞ্জাব ও তৃতীয়জনের বাড়ি বিহারে। জখম ৩৮জন শ্রমিকের বেশিরভাগের বয়স ২০ থেকে ৪০বছরের মধ্যে। মাত্র কয়েকজন ছিলেন পঞ্চাশের কাছকাছি বয়সের। তাঁরা সবাই একটি ঠিকাদার সংস্থার অধীনে স্কিলড লেবার হিসেবে কাজ করছিলেন।

ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পর এদিন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, আইওসির মতো একটি রিফাইনারি ক্ষেত্রে এইধরনের গাফিলতি কখনও আশা করিনি। তবে কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েই তদন্ত করছে। মৃত ও জখমদের তালিকা পেলেও এখনও দুর্ঘটনার সময় কতজন উপস্থিত ছিলেন সেই তথ্য আইওসি দিতে পারেনি। আইওসির সঙ্গে ঠিকাদার সংস্থা শিল্পীর মধ্যে এবিষয়ে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। কলকাতায় যাঁদের পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক। তাঁদের দেহের ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। ওই শ্রমিকদের কলকাতায় পাঠানো ও হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। এদিন সকাল থেকেই আইওসি কারখানার গেট ঘেরাও করে দুর্ঘটনার প্রকৃত তথ্য প্রকাশ, মৃত ও জখমদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় আইএনটিটিইউসি। দ্রুত হলদিয়ায় বার্ন ইউনিট গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হয়। হলদিয়ার ফ্যাক্টরি ইন্সপেক্টর দেবায়ন দে বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষকে শাটডাউনের কোনও ধরনের হটজব অর্থাৎ ঝালাইয়ের কাজ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইওসিকে কয়েকমাস আগেই পুরো প্ল্যান্টের সেফটি অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা জমা পড়েনি। জানা গিয়েছে, হলদিয়া আইওসি রিফাইনারিতে ২০২০সালের ডিসেম্বর মাসে এক্সটারনাল অডিট টিম এসে তাদের দ্রুত সেফটি অডিট রিপোর্ট তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছিল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#delhi, #IOC, #Haldia Refinery Indian Oil Corporation, #Soumen Mohapatra

আরো দেখুন