মোদী সরকারের ভ্রান্ত নীতির কারণেই বিদেশে ডাক্তারি পড়ার চাহিদা?
তুলনামূলক কম খরচে ডিগ্রি পাওয়ার সুযোগ একটি কারণ। তবে এটাই একমাত্র কারণ নয়। দেশের মেডিক্যাল শিক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ভ্রান্ত’ নীতির জন্যও কাতারে কাতারে ছেলেমেয়ে এখন ভিন দেশে পড়তে যাচ্ছে। এমনটাই বলছেন বিদেশে পড়তে যাওয়া বহু মেডিক্যাল ছাত্রছাত্রী। তাঁদের মতে, বিদেশ থেকে ডাক্তারি পাশ ছাত্রছাত্রীদের জন্য এফএমজি পরীক্ষা এমনই কঠিন করে রাখা হয়েছে, যাতে তাঁরা এই দেশে ডাক্তারি করার সুযোগই না পান। ফলে সার্বিকভাবে এই বার্তা যায়, দেশের সরকারি বা প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাশ না করলে এ দেশে ডাক্তারি করা যাবেই না। তাঁদের অভিযোগ, মেডিক্যাল শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বড় বড় কিছু কর্পোরেট গোষ্ঠী ও শীর্ষস্তরের আমলা মহলের একাংশের আঁতাতের জন্য এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাছাড়া দেশে ডাক্তারি পড়ার ক্ষেত্রে প্রায় ৭০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত। ফলে মেধাবী হয়েও নিট পাশের পর ভর্তির জন্য তুমুল প্রতিযোগিতায় যৎসামান্য সুযোগ পান সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা।
যখন মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড নিত, সেই সময় আনুমানিক সাড়ে ৪ হাজার র্যাঙ্ক করেও বাংলায় ভালো কলেজে মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ পাননি আমতলার সুশোভন ঘোষ। সরিষা রামকৃষ্ণ মিশনের এই প্রাক্তনী এখন ফাইনাল ইয়ার ডাক্তারি পড়ছেন কিরঘিজ রিপাবলিকের এক সরকারি মেডিক্যাল কলেজে। সেখান থেকে ফোনে বললেন, দেখা যাক এফএমজি পরীক্ষা উঠে যায় কি না। যদি উঠে যায় এবং সবার জন্য নেক্সট চালু হয়, দেখবেন দেশের বহু নামকরা মেডিক্যাল কলেজের অনেক ছাত্রছাত্রী খুব ভালো ফল করতে পারবেন না। তাঁর দাবি, দেশে যদি সুযোগ নাও পাই, পাশ করলে ইউরোপের বহু দেশে ডাক্তারি করতে পারব। দীর্ঘদিন ধরে নিট-এর প্রস্তুতির শিক্ষকতায় যুক্ত ডাঃ অমিয়কুমার মাইতি। তাঁর মত অবশ্য আলাদা। তিনি বলেন, বিদেশে পড়তে যাওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। নিঃসন্দেহে খরচ একটি অন্যতম কারণ। তাছাড়া বহু দেশে ডাক্তারি পড়ার জন্য কিস্তিতে টাকা মেটানোর সুযোগ সহ বিভিন্ন ছাড় আছে। আর এখানে ব্যাঙ্কের কাছে ঋণশোধের গ্যারান্টি দিতে হয়। তবে যা হোক না কেন, আগুপিছু ভেবে তবেই বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।