বিধানসভায় প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রতর ঘরে কে বসবেন? জমা পড়ল একাধিক আবেদন
গত বছর ৪ নভেম্বর প্রয়াত হয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুতে শূন্য হওয়ার দফতরের দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিধানসভায় তাঁর জন্য বরাদ্দ ঘর এখনও শূন্যই রয়ে গিয়েছে। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের লাগোয়া শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘর। তার পরের ঘরেই বসতেন সুব্রত। কিন্তু তিনি প্রয়াত হওয়ার পর এই ঘরটি ফাঁকা। সূত্রের খবর, ওই ঘরটি পেতে একে একে চার জন পূর্ণমন্ত্রী দরবার করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওই ঘরটি কাকে দেওয়া হবে, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বিধানসভায় প্রত্যেক মন্ত্রীর আলাদা আলাদা ঘর রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, পরিবহণমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, পূর্তমন্ত্রী, বিদ্যুৎমন্ত্রী, বনমন্ত্রীর সঙ্গেই মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ ও উপমুখ্যসচেতক তাপস রায়ের ঘর একতলায়। দোতলায় অন্য পূর্ণ ও প্রতিমন্ত্রীর ঘর বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার বিষয়টি না-পসন্দ অনেক মন্ত্রীর। তাই একাধিক মন্ত্রী দোতলা ছেড়ে নীচে সুব্রতবাবুর ফাঁকা ঘরের জন্য দাবি জানিয়েছেন। বর্তমানে একতলায় এখন দু’টি মাত্র ঘর ফাঁকা। একটি প্রয়াত প্রাক্তন পঞ্চায়েতমন্ত্রীর, অন্যটি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের। গত নভেম্বরে মন্ত্রিসভা থেকে অমিত পদত্যাগ করায় তাঁর ঘরটিও শূন্য। বিধানসভা সূত্রে খবর, সুব্রতবাবুর ঘরটির পেতে আবেদন জানিয়েছে চার জন মন্ত্রী। বিধানসভার কর্মিমহলের মতে, সব মন্ত্রীই মুখ্যমন্ত্রীর নজরে থাকতে চান। তাই শূন্য ঘরের দখল পেতে এখন থেকেই দরবার করা শুরু হয়ে গিয়েছে।
সূত্রের খবর, এ বিষয়ে কে কোন ঘর পাবেন, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর ঘরটি পেতে পারেন রাজ্যের বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বিধানসভায় এখন তাঁর ঘর দোতলায়। যেহেতু অর্থ, স্বাস্থ্য, ভূমি-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই, তাই তিনি পেতে পারেন অমিতের ছেড়ে যাওয়া ঘরটি। বিধানসভার একাংশের মতে, সুব্রতবাবু যেহেতু রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী ছিলেন, তাই স্বাভাবিক নিয়মেই ঘরটি পাওয়া উচিত রাজ্যের বর্তমান পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায়ের। কিন্তু তিনি যে ঘরটি পাবেনই, তা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। কারণ পুলক ছাড়াও রাজ্য মন্ত্রিসভায় তাঁর চেয়ে অনেক অভিজ্ঞ মন্ত্রী রয়েছেন। তাই ঘর বণ্টনের সময় সে কথাও মাথায় রাখা হবে।
বিধানসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বাজেট অধিবেশন শেষ হবে আগামী সোমবার। তারপর ফের বিধানসভার অধিবেশন বসতে পারে জুন-জুলাই মাসে। তাই সেই অধিবেশনের আগেই ঘর বণ্টন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন স্পিকার। কারণ প্রশাসন সূত্রের খবর, বালিগঞ্জ বিধানসভা ও আসানসোল লোকসভার উপনির্বাচনের পরে রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল ঘটাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই সেই রদবদল পর্যন্ত ঘরের দখল পেতে অপেক্ষা করতে হবে মন্ত্রীদের।