যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলকে ‘পুড়িয়ে মারার’ নিদান এসএফআইয়ের, ভাইরাল ভিডিও
আলিয়ার (Alia University) পর এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রর অশ্রাব্য ভাষণ সামনে এল। তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘সামাজিক আরশোলা’ সম্বোধন করে ছুটিয়ে এবং পুড়িয়ে মারার নিদান দিলেন বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের এক নেতা। বিতর্কিত ভাষণের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বাম ছাত্রনেতা প্রকাশ্যে বলছেন, “কমরেড আমাদের শপথ গ্রহণ করতে হবে, যেখানে তৃণমূলের সামাজিক কিটদের আমরা দেখতে পাব, এদের ঘিরে ধরে ফেলে ছুটিয়ে মারব। অনুব্রত, আরাবুল, আনারুলের মতো সামাজিক কিটদেরও আমরা ছুটিয়ে মারব।” এসএফআইয়ের এই নেতার নাম অনুষ্টুপ চক্রবর্তী। তিনি যাদবপুরের এমফিল ছাত্র। ইতিমধ্যে ওই বাম ছাত্রনেতার নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গবেষক ছাত্র সঞ্জীব প্রামাণিক অভিযোগটি দায়ের করেছেন।
বাম ট্রেড ইউনিয়নগুলি গত ২৮ এবং ২৯ মার্চ সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছিল। ধর্মঘটের দ্বিতীয়দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) ছাত্রছাত্রীদের ঢুকতে বাধা দেয় এসএফআই। প্রতিবাদ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও তৃণমূল ছাত্রপরিষদ নেতা সঞ্জীব। ওইদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথ বন্ধ করে সভা করে এসএফআই। চিৎকার করে সেই সভায় অনুষ্টুপ নামের ওই ছাত্রনেতা বলেন, “সঞ্জীব প্রামাণিকদের মতো তথাকথিত বাঘদের আমরা ছুটিয়ে মারব। তৃণমূল কংগ্রেসের মতো সামাজিক আরশোলাদের যদি আমরা ছুটিয়ে না মারি, এরা একদিন আমার আপনার ঘর নোংরা করতে আসবে। আমাদের শপথ নিতে হবে কমরেড, যেখানে এদের মতো সামাজিক কিটদের আমরা দেখতে পাব, এদের ঘিরে ধরে ফেলে ছুটিয়ে মারব।”
ভাষণে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম এবং বীরভূমের বগটুইকাণ্ডে ধৃত তৃণমূল নেতা আনারুল ইসলামের নাম উল্লেখ করেন এসএফআই নেতা। তিনি বলেন, “এদের মতো সামাজিক কিটদের আমরা ছুটিয়ে মারব। আমাদের ঘৃণার আগুনে, ক্ষোভের আগুনে তৃণমূলকে আমরা পুড়িয়ে মারব। যদি না পুড়িয়ে মারতে পারি ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। বাংলাকে আমরা বাঁচাতেও পারব না।” উপস্থিত এসএফআই সদস্যরা হাততালি দিয়ে এই উগ্র ভাষণকে সমর্থন করেন।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য এই বিদ্বেষমূলক ভাষণের তীব্র ধিক্কার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এসএফআই মুখে বড় বড় কথা বলে। ওদের প্রকৃত রূপ প্রকাশ পেয়েছে। যাদবপুর ও প্রেসিডেন্সির মতো বাংলার যে দু’টি ক্যাম্পাসে ওরা এখনও আছে, অচিরেই মুছে যাবে। বাংলার কোনও ক্যাম্পাস ওদের মেনে নেবে না।” গবেষক ছাত্র সঞ্জীব জানিয়েছেন, “ধর্মঘট সফল করতে ওরা কয়েকজন সাধারণ ছাত্রছাত্রীকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দিচ্ছিল। আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। সেই কারণে প্রকাশ্যে আমাদের পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছে। যাদবপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।”
হুমকিমূলক ভাষণ দেওয়া বাম ছাত্রনেতা ফোন না তোলায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা মিছিলে বলি ব্যারিকেডের লাল আগুনে তৃণমূলকে পুড়িয়ে দাও। রূপকার্থে একথা বলা হয়। তৃণমূলের সঙ্গে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের যোগ নেই। তাই তাঁরা বুঝতে পারেন না। অনুব্রতরা সত্যি সত্যি মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। এদের বিরুদ্ধে আমাদের স্লোগান অব্যাহত থাকবে।”