ধানতলা কাণ্ড: দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও ধর্ষণ-খুনের প্রমাণ নেই
ধানতলা কাণ্ডে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের কোনও প্রমাণ মেলেনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর এমনটাই দাবি পুলিসের। প্রথমবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও ধর্ষণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় মুখ পুড়েছে বিজেপির। রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে গিয়ে কার্যত লেজে-গোবরে অবস্থা গেরুয়া শিবিরের। প্রথমবার ময়নাতদন্তের পর কিশোরীর দেহ দেখে রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী দাবি করেছিলেন, এটা আত্মহত্যার ঘটনা নয়। তাকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিধায়ক চিকিৎসক হওয়ায় স্রেফ তাঁর সন্দেহের উপর ভিত্তি করে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি জানিয়েছিল পরিবার। কিন্তু, তাতেও ধর্ষণ ও খুনের কোনওরকম প্রমাণ না মেলায় বিধায়ক ভোল পাল্টাতে সময় নেননি। তিনি পুরো দায় পরিবারের উপরই চাপিয়েছেন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরীর পরিবার প্রথমে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছিল। পরে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ আনা হয়। দেহ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবিও জানানো হয়। প্রথমবার দেহ ময়নাতদন্ত হয়েছিল রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। দ্বিতীয়বার কিশোরীর দেহ শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়। রানাঘাট পুলিস জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার রূপান্তর সেনগুপ্ত বলেন, ময়নাতদন্তের দু’টি রিপোর্টই হাতে এসেছে। সেইমতো তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, গাংনাপুরের ওই কিশোরীর মৃতদেহ ধানতলায় তার পিসতুতো দিদির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়। সে চড়ক মেলা দেখতে দিদির বাড়ি গিয়েছিল। ঘটনায় মৃতার পরিবার প্রথমে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করে। পরে বিজেপি বিধায়ক তার বাড়ি যেতেই পরিবার ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি জানায়। এই ইস্যুতে বিজেপি নেতাদের অডিও ক্লিপ ভাইরাল হতেই বিপাকে পড়ে গেরুয়া শিবির। ময়নাতদন্তের দ্বিতীয় রিপোর্ট আসার পর অস্বস্তি আরও বেড়েছে। এদিন বিজেপি বিধায়ক বলেন, রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে। যে কারণে কিশোরীর মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। একজন চিকিৎসক হিসেবে ওইদিন কিশোরীর দেহ দেখে আত্মহত্যা নিয়ে সন্দেহ হয়েছিল। মৃতার পরিবারেরও সন্দেহ হয়। তাই তাঁরা দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি করেছিলেন। সেইমতো ময়নাতদন্ত হয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে। অন্যদিকে মৃতার বাবা বলেন, মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। এই মৃত্যুর পিছনে নিশ্চিত কোনও রহস্য রয়েছে। পুলিস তদন্ত করে দেখুক।
রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি রত্না ঘোষ কর বলেন, মৃতদেহ নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করতে চেয়েছিল। এখন আসল সত্য সামনে আসতেই তারা মুখ লুকানোর জায়গা পাচ্ছে না।