রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আচমকা সুদের হার বাড়াতেই ব্যাপক ধস নামল শেয়ার বাজারে

দুপুরে আচমকা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার বাড়াতেই হুড়মুড়িয়ে ধস নামল শেয়ার বাজারে।

May 5, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

এলআইসি আইপিওর আত্মপ্রকাশ। এই আবহে গত দু’দিনের খরা কাটিয়ে বুধবার সকাল থেকেই একটু একটু করে উঠতে শুরু করেছিল সেনসেক্স। কিন্তু, দুপুরে আচমকা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার বাড়াতেই হুড়মুড়িয়ে ধস নামল শেয়ার বাজারে। প্রায় ১ হাজার ৩০৭ পয়েন্ট পড়ে যায় বম্বে শেয়ার বাজার (বিএসই) সূচক সেনসেক্স। থামে ৫৫ হাজার ৬৬৯-এর ঘরে, যা গত দু’মাসে সর্বনিম্ন। আর নিমেষের মধ্যে বিএসই-তে তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির উবে গেল ৬.২৭ লক্ষ কোটি টাকা। পাল্লা দিয়ে প্রায় ৩৯২ পয়েন্ট পড়েছে জাতীয় শেয়ার সূচক নিফটিও। থিতু হয়েছে ১৬,৬৭৭.৬০ পয়েন্টে।


আগামী জুন মাসে আরবিআইয়ের আর্থিক নীতি নির্ধারণ কমিটির (এমপিসি) বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি সামাল দিতে সূচি ছাড়াই গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের নেতৃত্বাধীন এমপিসি বৈঠকে বসে। সেখানেই রেপো রেট বাড়ানো হয় ৪০ বেসিস পয়েন্ট অর্থাৎ ০.৪০ শতাংশ। ফলে নয়া রেপো রেট দাঁড়ায় ৪.৪০ শতাংশ। তারপরেই হুড়মুড়িয়ে ধস নামে শেয়ার বাজারে। মিড ক্যাপ শেয়ারের দাম পড়েছে ২.৬৩ শতাংশ। আর স্মল ক্যাপ শেয়ার সূচক পড়েছে ২.১১ শতাংশ। সবথেকে বেশি পতন বাজাজ ফিনান্সের শেয়ারের। ৪.২৯ শতাংশ। তারপরে রয়েছে বাজাজ ফিনসার্ভ, টাইটান, ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, মারুতি, রিলায়েন্স, ডক্টর্স রেড্ডিস, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের মতো শেয়ার। শুধুমাত্র দাম বেড়েছে পাওয়ার গ্রিড, এনটিপিসি, কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের। আরবিআইয়ের এদিনের বৈঠকে রিভার্স রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখা হলেও ০.৫০ শতাংশ বেড়েছে নগদ জমার অনুপাত (সিআরআর)। নয়া সিআরআর কার্যকর হবে আগামী ২১ মে থেকে। প্রসঙ্গত, যে সুদের হারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়, তাকে রেপো রেট বলে।


করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলেও বিশ্ব অর্থনীতি মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তার মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে অস্থিরতা তৈরি হয়ছে। আকাশ ছুঁয়েছে তেলের দাম। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি। বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের সরবরাহও ব্যাহত হচ্ছে। এই আবহে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভও সুদের হার বাড়াতে পারে বলে অনুমান। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ফেড রেট বাড়তে পারে প্রায় ০.৫০ শতাংশ। তা হলেই ধস নামত শেয়ার বাজারে। কেননা সেক্ষেত্রে ঝুঁকির জায়গা ছেড়ে লগ্নিকারীরা চলে যেতেন সুরক্ষিত বিনিয়োগে। মনে করা হচ্ছে, মূল্যবৃদ্ধি রোধের সঙ্গে সেই বিনিয়োগকারীদের আটকাতেই আরবিআইয়ের এই সুদের হার বৃদ্ধি।

অন্যদিকে, রেপো রেট বৃদ্ধি এলআইসির আইপিও আত্মপ্রকাশে ‘চোনা’ ফেলে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীরা যেমন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তেমনই শেয়ারে বাজারে বিপুল ধসের জেরে সেকেন্ডারি মার্কেটে যাওয়ার পর বিমা সংস্থার শেয়ারের দর কতটা উঠবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জিওজিট ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস সংস্থার শীর্ষকর্তা ভি কে বিজয়কুমার বলেন, ‘এলআইসির আইপিও আসার দিনে আরবিআইয়ের পদক্ষেপে আমি স্তম্ভিত। মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় এমপিসির এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু, ঘোষণার সময় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা উচিত ছিল।’ 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen