সংক্রমণ হার বাড়তেই শাপে বর, বুস্টার নিতে আগ্রহ বাড়ছে আম জনতার
সাধারণ জনমানসে করোনার বুস্টার ডোজ নিয়ে প্রথম থেকেই তৈরি হয়েছিল অনীহা। বুস্টার নেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। বিশেষজ্ঞদের এক দলের ধারণা, বুস্টার ডোজের প্রতি এই অনীহার কারণেই করোনা ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে। চোখ রাঙাচ্ছে সংক্রমণের চতুর্থ তরঙ্গ। আর এতেই শাপে বর হয়েছে, অন্তত তথ্য-পরিসংখ্যান তেমনটাই জানাচ্ছে। করোনা সংক্রমণের ভয়ে ফের টিকা নিতে আগ্রহী জনতা। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মতোই ফের লাইনে দাঁড়িয়ে ভিড় ঠেলে বুস্টার ডোজ নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখ থেকে করোনার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু বুস্টার ডোজের গ্রহণের প্রতি মানুষে আচরণ ছিল হতাশাব্যাঞ্জক। বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হওয়ার পর জানুয়ারি মাসে প্রথম সপ্তাহে মাত্র ১২,৪০২জন করোনার বুস্টার ডোজ নিয়েছিলেন। কিন্তু সংক্রমণ ফের মাথাচাড়া দিতেই বুস্টার নিতে উপচে পড়েছে মানুষের ভিড়। গত পাঁচ দিনে প্রায় দুই লক্ষেরও বেশি মানুষ বুস্টার নিয়েছেন। শনিবার ৯ জুলাই ৭৬ হাজার টিকাকরণ হয়েছে, যার মধ্যে ৪৫ হাজারই বুস্টার ডোজ।
চলতি বছর জানুয়ারি মাস থেকে প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা ও ষাট বছরের বেশি বয়সীদের বুস্টার ডোজের টিকাকরণ শুরু হয়েছিল।
১০ এপ্রিল থেকে সাধারণ নাগরিকদের বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু তারপরেই সংক্রমণের হার তলানিতে এসে পৌঁছয়। দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ৫০-এর নীচে নেমে গিয়েছিল। ফলে বুস্টার নেওয়ার জন্য আম জনতার অনীহা ছিল, যা স্বাস্থ্যকর্তাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছিল। কিন্তু জুলাই মাস পড়তেই বদলে গেল ছবি। ২৪-৩০ জুন পর্যন্ত বুস্টার নিয়েছিলেন ৬৭,৫০৬ জন, শেষ পাঁচ দিনে বুস্টার নিয়েছেন ২,৪০,৮৭২ জন। রবিবার ১০ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত বুস্টার নিয়েছেন ৪২,৪১,৩৩৬ জন।
বুস্টার ডোজ নেওয়া প্রবণতার বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চিকিৎসকেরা করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন। দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজের মধ্যবর্তী সময় ৯ থেকে কমিয়ে ৬ মাসে কমিয়ে আনা হয়েছে। জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা বোঝাচ্ছেন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, করোনা কবে পুরদস্তুর বিদায় নেবে তা কেউ জানে না। তাই পরিবারের ও নিজের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সকলের বুস্টার ডোজ নিয়ে নেওয়া উচিত। বুস্টার ডোজ নেওয়া থাকলে হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা কমছে, সেই সঙ্গে সংক্রমণজনিত মৃত্যুর আশঙ্কাও প্রায় থাকছে না, বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।