দেশে দ্রুত বাড়ছে বেকারত্ব, সিএমআইই-র রিপোর্টে এরকমই ইঙ্গিত মিলেছে
রবিবার (৭ আগস্ট), শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশে বেকারত্ব এক লাফে পৌঁছেছে ৯.৬৬ শতাংশে। তার আগের সপ্তাহে যা ছিল ৬.৭৩%। শুধু গ্রামেই ওই হার ৫.৯৭% থেকে বেড়ে পৌঁছেছে ১০ শতাংশের কাছে (৯.৮৮%)। শহরেও বেকারত্ব ৯ শতাংশের উপরে। ৩১ জুলাই শেষ হওয়া সপ্তাহে এই হার ছিল ৮.৩১%। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র (Centre for Monitoring Indian Economy) দেওয়া পরিসংখ্যানে এরকমই তথ্য উঠে এসেছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ২০১৪ থেকেই এ দেশে জিডিপি বৃদ্ধির হার নিম্নগামী। ফলে বেকারত্ব বেড়েছে নাগাড়ে। কোভিড হানার আগেই তা হার ছিল ৪৫ বছরের সর্বোচ্চ। অতিমারিতে আরও অংখ্য মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। এখন সারা বিশ্বের মতোই আর্থিক সঙ্কট ঘনীভূত হচ্ছে ভারতে। সার্বিক ভাবে চাহিদা কমে গিয়েছে। চাহিদা কমলে উৎপাদন কমে। তখন কর্মনিযুক্তিও কমতে থাকে। তাই বাড়ছে বেকারত্ব।
অর্থনীতিবিদদের দাবি, দেশে বেশিরভাগ চাকরি অসংগঠিত ক্ষেত্রে। প্রায় ৫০% কাজ সেখানেই। ৫০% জিডিপি আসে এর থেকে। যুক্ত প্রায় ৮৩% কর্মী। এখানেও জ্ঞানভিত্তিক পেশায় নিয়োগ বেশি। বিশেষ দক্ষতা ছাড়া যে কাজ মেলে না। তথ্যপ্রযুক্তি, পরিবহণ, স্বাস্থ্য-সহ যে সব ক্ষেত্রে অনেক নিয়োগ হয়, সেখানে ২০১৩-১৪ থেকে কাজ বেড়েছে ২৯%। কোভিডের পর গ্রামে কাজ কমেছে। মহিলা কর্মীর সংখ্যা ২০১৩-১৪ সালে ৩১% থেকে ২০২০-২১ সালে নেমেছে ২৯ শতাংশে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরে তা আরও কমেছে। এই সবই বেকারত্ব বৃদ্ধির কারণ।
আবার বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, নতুন প্রকল্পে লগ্নি আটকে যাওয়ার পাশাপাশি বহু পুরনো প্রকল্পের সম্প্রসারণও ধাক্কা খেয়েছে বাড়তি আর্থিক বোঝায়। সুদ বৃদ্ধির জেরে শিল্পের মূলধন জোগাড় করার খরচ বেড়েছে। তার উপর রয়েছে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির চাপ। ফলে বহু সংস্থায় নিয়োগ কার্যত বন্ধ। বাজেটে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস ১০০ দিনের কাজে বরাদ্দ কমিয়েছে কেন্দ্র। তাতেও কাজ কমেছে। কৃষিতে পড়েছে মরসুমি প্রভাব। বিশ্ব জোড়া আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দাঁড়িয়েও ভারতের অর্থনীতি তুলনায় স্থিতিশীল বলে যে বার্তা দেওয়া হচ্ছে সরকারি মহলের তরফে, সিএমআইই-র পরিসংখ্যানে তার প্রতিফলন কোথায়, এই প্রশ্ন কিন্তু এখন উঠছে।