বিস্ময়ের চেয়ে কম নয়! শ্রীক্ষেত্রে কীভাবে রাঁধা হয় জগন্নাথদেবের ভোগ?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পুরীর মন্দিরে প্রভু জগন্নাথের ভোগ রাঁধা যেন মহাযজ্ঞের সামিল। ৭৫২টা উনুনে ৪০০ জন মিলে জগন্নাথদেবের ভোগ রান্না করেন। দু’ধরনের ভোগ রাঁধা হয়। একদিকে, রাঁধা হয় ভাত, ডাল, পায়েস, নানাবিধ তরকারি। অন্যদিকে মুড়ি, মুড়কি, খই ও নানা ধরনের শুকনো মিষ্টি। খাজা, গজা জাতীয় শুকনো মিষ্টির পাশাপাশি, চার-পাঁচ রকমের মালপোয়াও দেওয়া হয়। পাঁচরকমের ভাত, পাঁচ রকমের ডাল, শুক্তো, সবরকম সব্জি দিয়ে তরকারি, বেগুনের মরিচপানি, নারকেল বাটা দিয়ে বিভিন্ন চাটনি, নানান ধরণের পরমান্নও থাকে ভোগে। প্রভু জগন্নাথ ছাপ্পান্ন পদ গ্রহণ করেন।
সাত সকালে উনুন জ্বালানো হয়। সাতশো বাহান্নটা উনুনের প্রতিটিতে সাতটি করে মাটির হাঁড়ি পরপর বসিয়ে দিয়ে রাঁধা হয়। রান্নার পদ্ধতি ঘিরেই সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয়! সবথেকে ওপরের হাঁড়িটির রান্না সবার আগে তৈরি হয়। শুক্তো থেকে তরকারি কোনওটাই তেলে ভেজে বা কড়াইতে কষে রাঁধা হয় না। ভোগ রান্নায় কোনওরকম তেল, চিনি ব্যবহার করা হয় না। জলে সবজি, মশলা সব মাটির হাঁড়িতে দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়। তেলের বদলে ঘি ও চিনির বদলে গুড় দেওয়া হয়। জগন্নাথদেবের ভোগে আলু, পেঁপে, কাঁচালঙ্কা, টমেটো দেওয়া হয় না।
প্রভু দন্তমঞ্জনের পরই ভোগ নিবেদনের পালা আরম্ভ হয়। মধ্যরাতে ডাবের জল খেয়ে প্রভু শয়ন করেন। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ভক্ত ভোগ গ্রহণ করেন। আশ্চর্যের বিষয়, অদ্যাবধি কোনওদিন ভোগ কম পড়েনি বা বেশিও হয়নি। এটাই শ্রীক্ষেত্রের লীলা।