দেশে GST প্রতারণার অঙ্ক হিমশৈলের চূড়া মাত্র, নির্মলাকে তোপ অমিত মিত্রের

গত পাঁচ বছরে দেশে  পণ্য পরিষেবা কর প্রতারণার পরিমাণ ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা।

August 1, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি:  কেন্দ্রের  ডবল ইঞ্জিন সরকারের আমলে বেড়েই চলেছে জিএসটি দুর্নীতি। চলতি সংসদ অধিবেশনে সে কথা স্বীকার করে নিয়েছে খোদ মোদী সরকারের মন্ত্রক। গত পাঁচ বছরে দেশে  পণ্য পরিষেবা কর প্রতারণার পরিমাণ ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা।

 এই পাহাড় প্রমাণ প্রতারণার তথ্য সামনে রেখে এবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে কড়া চিঠি লিখলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থদপ্তরের প্রধান মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র। তাঁর  স্পষ্ট বক্তব্য, প্রতারণার এই অঙ্কটা আসলে হিমশৈলের চূড়া মাত্র। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যদি হিসেব কষা যায়, তাহলে জালিয়াতির পরিমাণ যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। অথচ এই GST-র জটিলতার কারণে সবথেকে বেশি বেকায়দায় পড়েছে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প। দেশে বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু সংস্থাই সমস্যা এড়াতে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছে।

নির্মলাকে লেখা চিঠিতে রাজ্যসভায় পেশ করা তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন অমিতবাবু। সেখানে মোদী সরকার  জানিয়েছে, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ পর্যন্ত ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকার GST প্রতারণা হয়েছে। 

রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথ্য পেশ করে বলেছেন, ‘এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৪০ লক্ষ ব্যবসা জিএসসি রেজিস্ট্রেশন নিয়েছে। মাত্র ০.৪২ শতাংশ ক্ষেত্রে এসংক্রান্ত তথ্য যাচাই করে দেখেছে সরকার। তাতেই দেখা গিয়েছে, ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রেই সংস্থাগুলির বাস্তবে কোনও রেজিস্ট্রেশন নেই। যদি ১ কোটি ৪০ লক্ষ ব্যবসার প্রতিটির তথ্য যাচাই করা যেত, তাহলে প্রতারণার হিসেব অঙ্কটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াত  তা ধারণারও বাইরে।’

 অমিত মিত্র লিখেছেন, গত ২ মাসে ৬৯ হাজার ৪২৬টি জিএসটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর যাচাই করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার ৮৯৩টি ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির কোনও অস্তিত্বই নেই। অর্থাৎ, সেগুলি খোলা হয়েছিল জালিয়াতির কারণে। শুধুমাত্র এক্ষেত্রে জিএসটি ফাঁকির পরিমাণ ১৯ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা। 

 প্রসঙ্গত,  ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষের জুলাই মাস পর্যন্ত GST প্রতারণা হয়েছিল ৫৬ হাজার ৮০৫ কোটি টাকার। সে তথ্য আগে সংসদে পেশ করেছিল মোদী সরকার। জালিয়াতি যে লাফিয়ে বাড়ছে, এটা তার প্রমাণ। এর বেশিরভাগই ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট সংক্রান্ত প্রতারণা। অমিতবাবুর অভিযোগ, জিএসটি সংক্রান্ত জটিলতার দায় বারে বারেই নিতে হচ্ছে ছোট শিল্পকে।  তিনি এ‌ও বলেন, এখনও পর্যন্ত ৪০০ পণ্য, ১০০টি পরিষেবার ক্ষেত্রে বদলাতে হয়েছে জিএসটি হার। কেন্দ্রীয় জিএসটির ১২৯টি বিধি বদল হয়েছে এই ক’বছরে। নিয়মের এত বদল কোনও ছোট শিল্পের ক্ষেত্রে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। 

শুরু থেকেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালু করা হয়েছে। এতে খেসারত দিতে হচ্ছে দেশকেই। এই সেই অভিযোগ ফের বাস্তবে প্রমাণিত হল বলে মত বিশেষজ্ঞ মহলের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen