বিপুল অঙ্কের প্রিমিয়ামের বোঝার জেরেই স্বাস্থ্যবিমা থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন আম জনতা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০৪৭ সালের মধ্যে প্রত্যেক দেশবাসী নাকি স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আসবেন, এটাই ছিল মোদীর দাবি। তবে আদপে ছবি একেবারেই উল্টো! পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের স্বাস্থ্যবিমা গ্রাহকের হার একেবারে তলানিতে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে পিছিয়ে ভারত। দেশবাসীর নজর শুধু জীবন বিমায়। লাইফ ইনস্যুরেন্স ছাড়া অন্য সব বিমা কেনার হার এক শতাংশেরও কম। বিমার প্রিমিয়ামের বিপুল খরচই একমাত্র কারণ!
সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম বোঝা হয়ে যাচ্ছে। পাঁচ বছরে বিমার প্রিমিয়াম বাবদ আদায় বেড়েছে ৯৮.৩৮ শতাংশ। বিমা পলিসির সংখ্যা অর্থাৎ গ্রাহক বৃদ্ধি পেয়েছে কেবল ১১.২২ শতাংশ। প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে প্রিমিয়াম খরচ। স্বাস্থ্যবিমা সংস্থাগুলি কিস্তির টাকার অঙ্ক বাড়িয়েই গিয়েছে। ধুঁকছে মধ্যবিত্ত। চিকিৎসার খরচ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, স্বাস্থ্যবিমা এখন প্রত্যেকের জন্যই জরুরি। লাগাম ছাড়া প্রিমিয়ামের বোঝা টানা কি সম্ভব?
বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইআরডিএর তথ্য বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে স্বাস্থ্যবিমায় প্রিমিয়াম আদায় হয়েছিল ১৭,৫২৪ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয় ৩৪ হাজার ৭৬৫ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। প্রায় দ্বিগুণ বাড়ে প্রিমিয়াম। পাঁচ বছরের মধ্যে প্রতিবারই প্রিমিয়াম আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯-২০ এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষে গ্রাহক কমেছে যথাক্রমে ১২ এবং ৪ শতাংশ হারে।
বিশ্বের বড় দেশগুলির কোথাও বিমার উপর করের চাপ নেই। আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স এমনকি ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে বিমার উপর কোনও কর নেই। সিঙ্গাপুরে আগে স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি চালু ছিল। গত বছর থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এদেশে বিমার উপর ১৮ শতাংশ জিএসটি চাপানো হয়েছে। যা গোটা বিশ্বে সর্বাধিক। সরকার যদি জিএসটি কমায় তাহলে প্রিমিয়ামের বোঝা কমবে। জিএসটি কমানোর জন্য লাগাতার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বিমা সংস্থার তরফে। দু’বছর আগে দেশের অর্থমন্ত্রী বৈঠকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কিছুই হয়নি।