শ্রাবণ মাসে ঝাঁপান গান

মনসামঙ্গলের চিরাচরিত কাহিনির উপর আধারিত হয় ঝাঁপান গানের পালা।

August 3, 2024 | < 1 min read
Published by: Drishti Bhongi
ঝাঁপান গান

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজও রাঢ বাংলার গ্রামে মনসা পূজার দিন বেহুলা-লখিন্দরের কাহিনি ও মা মনসার প্রতিষ্ঠার গল্পকে ঝাঁপান গানের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। মূলত সাপ ধরাতে দক্ষ বেদেরা বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ (চন্দ্রবোড়া, কালনাগিনী, শঙ্খচূড়, খড়িশ, গোখরো, ডোমনা চিতি) নিয়ে সারাদিন গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ঝাঁপান গান শোনান আর তার পুরস্কারস্বরূপ গ্রামের মানুষ তাদের ঝুলিতে চাল, ডাল, আলু, টাকা, সরষের তেল আর সিঁদুর তুলে দেয়।

শ্রাবণ মাস। নদীনালা, খালবিল সব পরিপূর্ণ। চারদিকে সাপের উপদ্রব। পল্লি-বাংলার ঘরে ঘরে তাই মনসাপুজোর আয়োজন। এমন সময় গ্রামের মনসার থানে বসেছ ঝাঁপান গানের আসর। সাপুড়িয়ারা ডালা খুলে বিষহরির বন্দনা গেয়ে সাপ খেলাতে শুরু করেন। তাঁদের শরীরের দোলা লক্ষ্য করে দুলতে থাকে সাপ। আর ঝাঁপান গানের সুরে দুলতে থাকে কৃষিজীবী পরিবারের বউ-ছেলে-মেয়ের মন।

মনসামঙ্গলের চিরাচরিত কাহিনির উপর আধারিত হয় ঝাঁপান গানের পালা। কোনওটির নাম দংশন, কোনওটি ভাসান, কোনও পালার নাম আবার বেহুলার বাসরসজ্জা। মূল গায়েন আসর শুরু করেন মনসা-বন্দনা গেয়ে। তারপর কথায়, গানে, অভিনয়ে এগিয়ে যায় মূলত করুণ রসের কাহিনি। সর্পদংশনে মৃত লখিন্দরের শোকে বেহুলার হাহাকার কোথাও গিয়ে মিলে যায় গ্রামের সেই কৃষক রমণীর নিষ্ঠুর নিয়তির সঙ্গে, যাঁর স্বামী চাষের জমিতে গিয়ে সাপের কমড়ে পৃথিবী ছেড়েছে।

মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, নদীয়া, পূর্ব বর্ধমান ইত্যাদি কৃষিপ্রধান জেলায় আজও মহা ধুমধামের সঙ্গে হয় ঝাঁপান উৎসব। লোক গবেষকরা বলেন, বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার মতো রাঢ়বঙ্গে মা মনসাকে সর্পদেবীর পাশাপাশি বৃষ্টি, চাষবাস ও সমৃদ্ধির দেবী হিসেবেও পুজো করা হয়। সেই মতো বদলে যায় গানের কথা-কাহিনি। ঝাঁপান উৎসবের অন্যতম অঙ্গ সাপের খেলা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen