জলে ডুবল কঙ্কালীতলা, তারাপীঠ, রাজ্যের আপত্তি উড়িয়ে জল ছাড়ল ডিভিসি, পাঞ্চেত
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কোপাই নদীর জলে আবারও ডুবল সতীপীঠ কঙ্কালীতলা। এবারের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। টানা তিনদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিপাতের জেরে নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন ব্যারেজ হাজার হাজার কিউসেক জল ছাড়ছে। ফুলেফেঁপে উঠেছে কোপাই নদী। মন্দির প্রাঙ্গণের গর্ভগৃহ জলের তলায়। মন্দির ডুবে রয়েছে। নিত্য পুজোপাঠ ও দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ। বিকেলে কঙ্কালীতলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় ও জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ মন্দির প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করেন।
অতিবৃষ্টির জেরে রবিবার বিপদসীমার উপরে বইছিল কোপাইয়ের জল। গভীররাতে ডুবে যায় গোয়ালপাড়া সংলগ্ন সেতু। বোলপুর-সিউড়ির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ডুবে যায় ৫১ পীঠের অন্যতম সতীপীঠ কঙ্কালীতলা। মন্দির প্রাঙ্গণ ডুবে যাওয়ার কারণে গর্ভগৃহে এদিন বন্ধ ছিল নিত্যপুজো। পরিবর্তে মাকে পুজো করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী শিব মন্দিরে। প্রতিদিনের মতো এদিনও নিয়ম মেনে গর্ভগৃহে মা কঙ্কালীকে ভোগ দিয়েছেন পুরোহিতরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হওয়া পর্যন্ত পুণ্যার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
অতিবৃষ্টির কারণে জেলার প্রচুর মাটির বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের উপর ক্ষোভপ্রকাশ করেন জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ। এদিন নানুরের চারকলগ্রাম পঞ্চায়েতের মারুন্দি গ্রামে মাটির বাড়ি ধসে গিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রেশমা খাতুন ও তার ভাই সপ্তম শ্রেণির ছাত্র বরকতুল্লা শেখ গুরুতর জখম হয়েছে। রেশমার অবস্থা আশঙ্কাজনক। সভাধিপতি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার কারণে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে রাজ্যের অধিকাংশ গরিব বঞ্চিত। মাটির বাড়ি পাকা হলে দুর্ঘটনা ঘটত না।
নিম্নচাপের জেরে অতিবৃষ্টিতে দ্বারকার দু’কূল ছাপিয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে তারাপীঠ মহাশ্মশান সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। ইলেক্ট্রিক চুল্লির ট্রান্সফর্মার জলের তলায়, কাঠের চুল্লিও ডুবে গিয়েছে। যার জেরে বন্ধ রয়েছে দাহ। দ্বারকার পাড়ের একাধিক লজের একতলায় জল ঢুকে গিয়েছে। বিঘার পর বিঘা জমি জলের তলায়। বন্যার আশঙ্কায় বহু পর্যটক তারাপীঠ ছাড়তে শুরু করেছেন।
টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ঝাড়খণ্ডের ছাড়া জলে ফুলেফেঁপে উঠেছে জেলার বিভিন্ন নদনদী। বিভিন্ন ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। বন্যা পরিস্থতির সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র তারাপীঠে। রবিবার রাত থেকে দ্বারকায় জল বাড়তে শুরু করে। তারাপীঠ থেকে বামাখ্যাপার বাড়ি যাওয়ার আটলা রোডের উপর দিয়ে বইছে জল। যার জেরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
শ্মশানের সাধুদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে এসে খাবাবের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দেউচা ব্যারেজ থেকে ৩৯৭৩ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে দ্বারকায়। তারাতীর্থ স্কুলে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। তারাপীঠ লাগোয়া কিছু গ্রামও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। প্রশাসন মানুষের পাশে রয়েছে।