রাজ্যজুড়ে ধানক্রয় কেন্দ্র চার গুণ বেড়ে ১২০০
করোনা আতঙ্ক বদলে দিয়েছে গোটা রাজ্যের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি। কিন্তু এই অভিশাপের মাঝেই অন্য ছবি দেখা গিয়েছে চাষি-ঘরে। কারণ, বিনামূল্যে রেশনের জন্য সরকারি উদ্যোগে ধান কেনায় গতি আসা। এবার ভিড় এড়িয়ে সেই গতি অব্যাহত রাখতে রাজ্যজুড়ে চারগুণ স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্র গড়তে চলেছে খাদ্যদপ্তর। খরিফ মরশুমের ফসল ওঠার মধ্যেই প্রায় ৩০০টি ব্লকে এরকম ৪টি করে কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। উপযুক্ত জায়গা খোঁজার কাজ চলছে বলে দপ্তর সূত্রে খবর। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫০টি ধান কেনার স্থায়ী কেন্দ্র চালিয়েছে খাদ্যদপ্তর। মূলত প্রতিটি ব্লকে একটি করে কেন্দ্র ছিল। অল্প কিছু ব্লকে দু’টি কেন্দ্র চলেছে। আগামী নভেম্বর মাস থেকে শুরু হবে খরিফ মরশুমের ফসল ওঠা। তবে নতুন ধান কেনা জোরকদমে চলবে ডিসেম্বর থেকে।
খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকদের মতে, কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়লে দূরত্ববিধি মেনে ধান কেনাবেচায় সুবিধা হবে। শুধু তাই নয়, চাষিদের সেখানে আসার ব্যাপারে আগ্ৰহও বাড়বে। মূলত দূরত্বের কারণে চাষিদের মধ্যে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে আসার ব্যাপারে অনীহা দেখা যায়। তাই তাঁরা কম দামে ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করে দেন। কেন্দ্রগুলি ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তে তৈরি হলে চাষিকে ফসল নিয়ে বেশি দূর যেতে হবে না। রোখা যাবে ফড়েদের রমরমা। স্থায়ী কেন্দ্রে ধান বিক্রি করলে নির্ধারিত মূল্যের উপর চাষি বোনাস বাবদ অতিরিক্ত অর্থ পান। এই মরশুমে কুইন্টাল পিছু ২০ টাকা বোনাস দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় যে ১৮৬টি কিষাণ বাজার বা মান্ডিতে ধান কেনার স্থায়ী কেন্দ্র চলে। কিন্তু তার বাইরেও স্থায়ী কেন্দ্র খুলতে হয়। করোনা পরিস্থিতিতে চাষিদের টাকার প্রয়োজন বেড়েছে। ধান ওঠার পর সরকার বেশি পরিমাণে ধান কিনতে না পারলে, চাষিরা কম দামে বিক্রি শুরু করবেন। যা একেবারেই চান না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার উপর আগামী বছরই বিধানসভা নির্বাচন। তাই বেশি সংখ্যক কেন্দ্র খুলে ধান কিনে নিতে চাইছে রাজ্য। তার জন্য প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া হবে।
অন্যদিকে,আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত রাজ্যে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে চালের চাহিদা বেড়েছে। চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে প্রায় সাড়ে ৪৮ লক্ষ টন ধান কেনা হয়েছে। যা সর্বকালীন রেকর্ড। তা দিয়ে আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেশনে চালের চাহিদা মেটানো যাবে। এবার রাজ্যে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।