ট্যাংরার দে বাড়ির হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে প্রসূন? নাবালক ভাইপোর বয়ানে কাকার দিকেই অভিযোগের আঙুল

সোমবার রাতে সেই ওষুধ মেশানো পায়েস খাওয়াতে গেলে বাধা দেয় কিশোরী।

February 23, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ট্যাংরা হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট উন্মুক্ত হচ্ছে ধীরে ধীরে। ছবি সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ট্যাংরা হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট উন্মুক্ত হচ্ছে ধীরে ধীরে। দে পরিবারের নাবালক কিশোর সরাসরি জানিয়েছে, কাকা প্রসূনই মা, কাকিমা, আর বোনকে খুন করেছে। পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণও ছোট ভাই প্রসূনের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, দুই ভাই-ই খুনের পরিকল্পনায় শামিল ছিলেন। তা জানতে পেরেই ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস খেতে অস্বীকার করেছিল প্রসূনের মেয়ে প্রিয়ংবদা। শারীরিক নির্যাতন করে বলপূর্বক সেই পায়েস খাওয়ানো হয় কিশোরীকে। বিষক্রিয়ার জেরে মৃত্যু হয় প্রিয়ংবদার।

বুধবার ইএম বাইপাসের দুর্ঘটনার সূত্র ধরে শীল লেনের রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের কথা প্রকাশ্যে আসে। দুর্ঘটনায় জখম দুই ভাই ও এক নাবালক বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তারা বয়ান দেওয়ার মতো অবস্থায় না থাকায় রহস্য ঘনাতে থাকে। ঘটনার চারদিন পর ক্রাইম সিনের রহস্য স্পষ্ট হতে শুরু করে। বড়ভাই প্রণয় ও তার নাবালক ছেলে সুস্থ হতেই শনিবার সকালে হাসপাতালের আইসিইউতে তাদের জেরা করতে যান হোমিসাইড শাখার তদন্তকারী। সূত্রের খবর, নাবালককে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পাওয়া গিয়েছে। খুনি কে, সে বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত তদন্তকারীরা।

জেরায় পুলিশ জেনেছে, বছর দু’য়েক ধরে অনিদ্রায় ভুগছিলেন প্রসূন। চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খেতেন। সম্প্রতি ব্যবসায় ব্যাপক মন্দা ও কোটি কোটি টাকা ঋণের কারণে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে দুই ভাই। পরিবারের সকলে সেকথা জানিয়েছিলেন তাঁরা। দুই বধূ ও সন্তানরা তাতে সম্মতি দেয়নি। প্রণয়-প্রসূন ঠিক করে, পায়েসে ঘুমের ওষুধ অধিক পরিমাণে মিশিয়ে সবাই মিলে আত্মহত্যা করবেন। ডাক্তারের লেখা প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঘুমের ওষুধ কেনা যায় না। তাই প্রসূনের প্রেসক্রিপশনের সাহায্য নিয়ে একসঙ্গে এক প্যাকেট ঘুমের ওষুধ অনলাইনে অর্ডার করা হয়। সেই অর্ডার বাড়িতে পৌঁছে দেন ডেলিভারি বয়। দোতলায় যখন পায়েস তৈরি হচ্ছিল, তখন তিনতলায় ঘুমের ওষুধ থেঁতো করার কাজ করছিলেন দুই ভাই। ওষুধ মেশানোর সময় তাঁদের দেখে ফেলে প্রিয়ংবদা। সোমবার রাতে সেই ওষুধ মেশানো পায়েস খাওয়াতে গেলে বাধা দেয় কিশোরী। তদন্তকারীদের অনুমান, তার জেরেই মাথায় ভারী কোনও বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়। মুখ চেপে পায়েস খাইয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, সে কারণেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মাথা, ঠোঁট, মুখ, বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।

সূত্রের খবর, জেরায় ফের বয়ান বদল করেছেন প্রসূন। তাঁর দাবি, “সবাই এক সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খায়। কিন্তু সকালে উঠে দেখা যায়, বউরা কেউ মারা যায়নি। তাই তাঁরা নিজেরাই হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।” ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে এই বয়ান মিলছে না। তদন্তকারীদের দাবি, প্রিয়ংবদার মৃত্যু নিশ্চিত হতেই দুই বধূকে পরিকল্পনা মাফিক খুন করা হয়। ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয় প্রণয়ের ছেলেকেও। কিন্তু, তার শরীরে বিষক্রিয়ার প্রভাব সেভাবে পড়েনি। তিনজন মিলে সুইসাইড করবে বলে গাড়ি নিয়ে বের হয় দুই ভাই। ঘোরের মধ্যে থাকা ভাইপোও ছিল সঙ্গে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen