আমূল সংস্কার! মানসিক রোগসহ একঝাঁক অসুখ স্বাস্থ্যবিমার আওতাভুক্ত হচ্ছে
স্বাস্থ্যবিমার গাইডলাইন বদলে যাচ্ছে। আগামী মাস থেকেই একঝাঁক পরিবর্তন হবে স্বাস্থ্যবিমায়। সম্পূর্ণ নতুন করে সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বিমা ক্ষেত্রে। বিমা গ্রাহকদের কছে সুসংবাদ, এবার আরও একঝাঁক অসুখ স্বাস্থ্যবিমার আওতাভুক্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে যে অসুখগুলির চিকিৎসায় এতদিন বিমার সুবিধা পাওয়া যেত না, সেরকম বেশ কিছু রোগের চিকিৎসাও এর আওতায় আসবে। আর এই নিয়েই প্রবল টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ইনসিওরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সঙ্গে বিভিন্ন বিমা সংস্থার। কিছু মানসিক রোগ, বয়সজনিত অসুস্থতা, লাইফস্টাইল ডিজিজকে আনা হবে বিমার আওতায়। নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার, জেনেটিক অসুস্থতা, পিউবার্টি ও মেনাপজজনিত উপসর্গ ও অসুস্থতাকেও বিমার অধীনে আনার কথা বলা হয়েছে। এই রোগগুলি বর্তমানে স্বাস্থ্যবিমার মধ্যে নেই। চোখের কিছু সার্জারি, হাঁটুর সমস্যা ও অপারেশনও থাকবে নতুন তালিকায়। কর্মস্থলের দূষণজনিত কারণে যে অসুস্থতা হয়, এবার সেগুলির মধ্যে শ্বাসকষ্ট অথবা চর্মরোগের মতো অসুস্থতার চিকিৎসাকেও বিমার অধীনে আনা হবে এই নয়া নির্দেশিকায়।
ইনসিওরেন্স রেগুলেটরির পক্ষ থেকে নয়া গাইডলাইনে বলা হয়েছে, আগামী ১ অক্টোবর থেকেই চালু হবে নতুন নিয়ম। পুরনো এবং নতুন বিমার ক্ষেত্রে এই নয়া নির্দেশিকা কার্যকর হবে। নতুন বিমা সংস্কার বিগত এক বছর ধরেই ধীরে ধীরে চালু করা হয়েছে। সাধারণ নিয়ম হল, সরাসরি রোগের পাশাপাশি কিছু কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু পরিভাষা ও টার্ম ব্যবহার করা হয় বিমা প্রদানকারী সংস্থার পক্ষ থেকে। সেই পরিভাষার অধীনে যে রোগগুলি অন্তর্ভুক্ত হয়, সেগুলিকেও বাদ দেওয়া হয় বিমার আওতা থেকে। বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বিমা সংস্থাগুলিকে বলা হয়েছে, কোন কোন রোগকে তারা বিমার অধীনে রাখতে নারাজ সেগুলি উল্লেখ করে তাদের স্থির করে দেওয়া পরিভাষা অনুযায়ী ব্যাখ্যা দিতে হবে। সেই ব্যাখ্যায় স্পষ্টভাবে বলতে হবে, কেন এই রোগগুলি বিমার অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। বিমা প্রদানকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে এই নিয়ে জোর টানাপোড়েন চলেছে। সংস্থাগুলির বক্তব্য, এমন বেশ কিছু রোগ আছে যা দীর্ঘকাল ধরেই রোগীর মধ্যে উপস্থিত। পাশাপাশি মানসিক অসুস্থতার সূত্রপাত ও রোগনির্ণয় প্রক্রিয়া নিয়েও প্রায়শই সমস্যা হয়। তাই একটি কোনও গ্রেস পিরিয়ড রাখা হোক। সেই কারণে স্থির হয়েছে, বর্তমানে কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা চালু রয়েছে, তেমনই নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হতে যাওয়া অসুস্থতাগুলির জন্যও নির্ধারিত সময়সীমা থাকবে। অর্থাৎ ৩০ দিন থেকে ৩৬৫ দিনের একটি গ্রেস পিরিয়ড। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু রোগের চিকিৎসার জন্য বিমার সুবিধা ওই সময়সীমা অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত পাওয়া যাবে না।
এর আগেই বিমা সংস্কার কর্মসূচি অনুযায়ী একটি তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সেটি হল কোনও গ্রাহক একটানা ৮ বছর প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার পর বিমা প্রদানকারী সংস্থা নবম বর্ষ থেকে কোনও ‘ক্লেইম’ প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না।