কমতে পারে GST-র স্ল্যাব-সংখ্যা, মধ্যবিত্তের সুরাহা হবে কি?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১১:১৩: ২০১৭ সালে দেশে চালু হয় পণ্য পরিষেবা কর (GST), জিএসটির দৌলতে ভারতীয় অর্থনীতি কতটা পুষ্ট হয়েছে বা আদৌ হয়েছে কিনা তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ছোট ব্যবসায়ীদের দাবি, জিএসটি তাঁদের ব্যবসায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। এবার জিএসটি হারের ধাপগুলি ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হতে চলেছে বলে খবর। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, শীঘ্রই জিএসটির বাস্তবসম্মত হার নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। মধ্যবিত্তের নিত্যপণ্যের জিএসটি হারের উপর জোর দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। জিএসটি হার কমানো হবে। সুতরাং দামও কমবে। জুলাই মাসের শেষেই ৫৬তম জিএসটি কাউন্সিল বৈঠকে জিএসটি করকাঠামোয় রদবদলের সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমে জোরালো হচ্ছে।
জিএসটির চারটি ধাপকে কমিয়ে দু’টি বা তিনটি ধাপে আনার প্রস্তাব নিয়েই আলোচনা চলছে। জিএসটির ১২ শতাংশের স্ল্যাবটা সম্পূর্ণ সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। ওই স্ল্যাবে থাকা পণ্যগুলির বেশিরভাগই ৫ শতাংশে কমিয়ে আনা হবে। আপাতত যে তালিকা তৈরি হচ্ছে, তার প্রায় সবই রয়েছে ১২ শতাংশে। রয়েছে টুথপেস্ট, বাসনপত্র, প্রেশার কুকার, ইলেকট্রিক ইস্ত্রি, বাইসাইকেল গিজার, ওয়াশিং মেশিন, খাতা ইত্যাদি। পণ্যের দামের উপর নির্ভর করবে জিএসটি হারের রদবদল। রেডিমেড গারমেন্টের মতো সামগ্রীর ক্ষেত্রে হাজার টাকার বেশি দর হলে পণ্য ও পরিষেবা করের বহর কমবে। স্টেশনারি কিছু পণ্যেও এই নিয়ম লাগু হবে। ভ্যাকসিন এবং কৃষিক্ষেত্রে জিএসটিও কমতে পারে।
বহু পণ্যের জিএসটি এক ধাক্কায় কমে গেলে কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয়ের আয় হ্রাসের আশঙ্কা করা যাচ্ছে। যে পণ্যগুলির তালিকা প্রাথমিকভাবে করা হচ্ছে, সেগুলির জিএসটি হার কমলে সার্বিকভাবে ৪০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। বেশ কিছু পণ্যের জিএসটি কমলে আর্থিক সঙ্কট বাড়বে। অন্যদিকে, দাম কমলে বিক্রি বাড়ার সম্ভাবনাও আছে। ফলে পণ্যের দাম কমে গেলে যদি বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায়, তাহলে লোকসান খুব একটা হবে না। ২০২৬ সালের মার্চ মাস থেকে রাজ্যগুলি আর জিএসটি ক্ষতিপূরণের সেস পাবে না। সুতরাং আর্থিক লোকসানের সম্ভাবনা থাকছেই। এসব সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে কাউন্সিলের মন্ত্রিগোষ্ঠী সুপারিশ প্রস্তাব জমা দেবে কাউন্সিলে।
জিএসটি ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগে থেকে চারটি ধাপে জিএসটির কাঠামো নির্ধারণ ঘিরে নানা মহল থেকে আপত্তি করা হয়েছিল। একটি বা দু’টি ধাপের মধ্যে করকাঠামোকে রাখার দাবি জানিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু আমল দেয়নি মোদী সরকার। ২০২২ সালে মোদী সরকার উপলব্ধি করে, জিএসটি ব্যবস্থা অতিজটিলতায় আক্রান্ত। জিএসটি কাঠামোয় বদল আনার উদ্দেশে কাউন্সিলে আলোচনা শুরু হয়। তা এখন বাস্তবায়নের পথে।