জমিতে জল জমলেও ফলবে ধান, বাংলার কৃষকদের জন্য কী উদ্যোগ ওয়েস্ট বেঙ্গল বায়োডাইভারসিটি বোর্ডের?
অতিবৃষ্টিতে জমি প্লাবিত হলেও ওয়েস্ট বেঙ্গল বায়োডাইভারসিটি বোর্ডের উদ্যোগে ‘ভাসা মানিক’, ‘ভাদুই’ ও ‘রায়গড়’ ধানবীজ রক্ষা করবে বাংলার কৃষিকে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:১৪: অতিবৃষ্টিতেও ক্ষতি হবে না ধানের। যতই বৃষ্টি হোক ধানগাছের গোড়া পচবে না। জমিতে সাতফুট জল জমলেও তার উপরে ভেসে থাকবে ধানের শিস। বেঁচে থাকবে ধানগাছ। ৯০দিনের মধ্যেই সেই ধান পাকবে। এমনই ধানের বীজ পাঠিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল বায়োডাইভারসিটি বোর্ড। জেলা কৃষি দপ্তর সহ রাজ্যের ৫৪ টি বীজভাণ্ডারে বেশ কিছু ধানের বীজ পাঠিয়েছে তারা।
হাওয়া অফিসের ধারণা, এবার ব্যাপক বৃষ্টি হতে পারে। অতিবৃষ্টি ও বিভিন্ন নদী বাঁধ থেকে জল ছাড়ার ফলে হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনায় কত একর জমি প্লাবিত হতে পারে, তা নিয়ে গবেষণাও শুরু হয়েছে। ফলে ধান চাষ যাতে কোনওভাবে বিঘ্নিত না-হয় সেই জন্যেই বীজ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল বায়োডাইভারসিটি বোর্ড।
তিন প্রজাতির ধানবীজের নাম হল ‘ভাসা মানিক’, ‘ভাদুই’, ‘রায়গড়’। এই তিন প্রজাতির ধানই সম্পূর্ণ দেশজ, বহুকাল আগে এগুলো রাঢ় বাংলায় চাষ হত। স্বল্প সময়ে বেশি ধান উৎপাদনের জন্য শঙ্কর প্রজাতির ধানের দিকে ঝুঁকেছিল কৃষকেরা। তাতেই এসব দেশীয় ধানের চাষ কমে যায় বা প্রায় লুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু ঘনঘন আবহাওয়ার বদল এবং বছর বছর বন্যার জেরে এবার প্রতিটি ব্লকে আমন ধানের অন্য প্রজাতির সঙ্গে এই তিনটি বীজও সরবরাহ করা হচ্ছে।
জমিতে সাতফুট জল দাঁড়ালেও এসব বীজের ধানগাছ তার থেকেও উঁচু হবে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ধানের শীষে জল লাগবে না। পোকায় কাটবে না। তিন মাসের মধ্যে ধান পাকবে। কৃষক নৌকা করে ধান কেটে ফিরবে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো রুক্ষ পাথুরে জমিতেও ধানচাষের অনুকূল বীজ খুঁজে পেয়েছে বায়ো ডাইভারসিটি বোর্ড। বায়ো ডাইভারসিটি বোর্ড এখন অযোধ্যা পাহাড়ের উপর পাথুরে জমিতে ধান চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। বিজ্ঞান ও গবেষণার অগ্রগতি কৃষিকে আরও এগিয়ে দিচ্ছে।