শুধু ফুটবলের গ্যালারি নয়, যেন বাঙালির বিপ্লবের মঞ্চ! ইস্টবেঙ্গলের প্রতিবাদী টিফো VIRAL সমাজমাধ্যমে
ইস্টবেঙ্গল মানেই স্পর্ধা,লড়াই ,আত্মত্যাগ। মাঠ হোক বা মাঠের বাইরে ইস্টবেঙ্গল মানেই এক প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:০০: ইস্টবেঙ্গল মানেই স্পর্ধা,লড়াই ,আত্মত্যাগ। মাঠ হোক বা মাঠের বাইরে ইস্টবেঙ্গল মানেই এক প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি। ১৯২০ সালের পয়লা অগাস্ট প্রতিষ্ঠা হয়েছিল এই ঐতিহাসিক ক্লাবের। এর পরে দেশ থেকে বিদেশ সব স্তরেই ভারতের নাম প্রতি মুহূর্তে উজ্জ্বল করেছে এই শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব।
বিদেশের মাটিতে গিয়ে সেরার মুকুট ছিনিয়ে এনেছে এক-দুইবার নয় তিন তিন বার। তবে এই ক্লাবকে গোটা দেশ কি শুধু তাঁদের খেলা ধুলার জন্য চেনে? না। এই ক্লাবের আরও একটি বড়ো দিক রয়েছে যার জন্য তাঁরা সব সময় পরিচিত,তা হলো প্রতিবাদ,আন্দোলন,সত্যের জন্য লড়াই।ভারতের বুকে যখন কোনো অন্যায় হচ্ছে বলে তাঁরা দেখেছে তখনই তাঁরা খেলার মাঠে হোক বা মাঠের বাইরে তাঁরা নিজেদের মতন করে প্রতিবাদ করেছে।
ফের একবার ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মধ্যে সেই প্রতিবাদী রূপ দেখা গেল, ডুরান্ড কাপে বুধবার ইস্টবেঙ্গল বনাম নামধারী এফসির ম্যাচে।
ইস্টবেঙ্গল আলট্রাসের পক্ষ থেকে এক ব্যানার দেখা গেল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন স্টেডিয়ামে। সেই টিফো তে লেখা ছিল, “ভারত স্বাধীন করতে সেদিন পরেছিলাম ফাঁসি! মায়ের ভাষা বলছি বলে, আজকে বাংলাদেশি?”
কয়েক বছর ধরেই বাঙালিদের উপর এবং “বাংলা ভাষা” এর উপর অত্যাচার চলেছে। পশ্চিমবঙ্গের বাইরের রাজ্য গুলিতে বাংলা ভাষা বললেই তাঁদেরকে বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হচ্ছে। যেখানে এই বাংলা ভাষার জন্য আমাদের বীর শহিদ স্বাধীনতা সংগ্রামীরা দিনের পর দিন লড়াই করে এই ভাষাকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে। যেখানে আমাদের দেশের জাতীয় সংগীত লিখেছেন একজন বাঙালি,সেখানে এই সময় দাঁড়িয়ে বাঙালি এবং বাংলা ভাষার উপরে চলছে নির্মম অত্যাচার। এখন বাংলা বললেই নাকি সে বাংলা দেশি। এরই প্রতিবাদে বুধবার লাল-হলুদ গ্যালারির সেই প্রতিবাদী টিফো আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছে নানা প্রান্তে।
সমাজ মাধ্যমে সেই টিফো এখন রীতিমতো ভাইরাল। তবে এই ধরনের প্রতিবাদী টিফো লাল-হলুদ গ্যালারিতে এই প্রথম নয় যে দেখা গিয়েছে। এই তো কয়েক বছর আগের কথা ভারতে NRC নিয়ে চলছে জোর তরজা। সেই সময়তেও ইস্টবেঙ্গল গ্যালারি দেখিয়েছিল তাঁদের সেই প্রতিবাদী ভাবমূর্তি। সেই সময় এক ম্যাচে লাল-হলুদ প্রাণ জনতা মাঠে নামিয়েছিল এক ব্যানার, সেই টিফোতে জ্বলজ্বল করে লেখা “রক্ত দিয়ে কেনা মাটি, কাগজ দিয়ে নয়”।
বুধবারে ইস্টবেঙ্গলের এই টিফোকে সমর্থন জানিয়ে নিজেদের সমাজ মাধ্যমে সেই টিফোর ছবি পোস্ট করছেন একাধিক রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে নাট্য ব্যক্তিত্বরা সর্বোপরি ইস্ট-মোহন সমর্থকরা।
লাল-হলুদের সেই টিফো কে সমর্থন জানিয়ে দেবাংশু ভট্টাচার্য নিজের সমাজ মাধ্যমে সেই ছবি পোস্ট করে লিখেছেন “ধন্যবাদ ইস্টবেঙ্গল”
রাজনৈতিক নেতা তথা ইস্টবেঙ্গল সমর্থক সৃজন ভট্টাচার্য নিজের সমাজ মাধ্যমে সেই ছবি পোস্ট করে লিখেছেন “আজ ৬ই অগাস্ট। ঘৃণার বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণার এর থেকে জরুরি দিন হতে পারে না। আমাদের ক্লাব। কেবল ক্লাব নয়, একটা জ্যান্ত আন্দোলন। ভালবাসা।
পরিচালক তথা মোহনবাগান সমৰ্থক সৌরভ পালোধি নিজের সমাজ মাধ্যমে সেই ছবি পোস্ট করে লিখেছেন “প্রয়োজনীয় এবং সাহসী।এক মোহনবাগান সমর্থকের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা এই টিফোর জন্য।”
রাজনৈতিক নেতা কলতান দাসগুপ্ত তিনিও সেই ছবি নিজের টাইমলাইনে পোস্ট করেন।
এছাড়াও কাউন্সিলার অরূপ চক্রবর্তী সেই ছবি পোস্ট করে লেখেন “আমাদের লড়াই ফুটবলের, আর সেটা তো ৯০ মিনিটের, মাঠের মধ্যে । বাকি সারা জীবন তো আমাদের একটাই অস্তিত্ব, একটাই পরিচয়। বাঙালি। জয় ইস্টবেঙ্গল, জয় মোহনবাগান, জয় মোহামেডান স্পোর্টিং। জয় বাংলা”