অংকৃশ-রমনদীপের বিনিময়ে স্যামসন কেকেআর-এ? ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলে ফেরার সম্ভাবনা ফিকে হচ্ছে রিঙ্কুর
আইপিএল ২০২৬ শুরুর আগেই জমে উঠেছে ভারতীয় ক্রিকেটের বাজার।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:২৫: আইপিএল ২০২৬ শুরুর আগেই জমে উঠেছে ভারতীয় ক্রিকেটের বাজার। কারণ একটাই—সঞ্জু স্যামসনের ভবিষ্যৎ। ২০২৫ মরশুমে রাজস্থান রয়্যালস তাকে ১৮ কোটি টাকায় রিটেইন করেছিল নিজেদের দলে। কিন্তু এবার ১১ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইছেন রাজস্থানের অধিনায়ক। স্যামসনের পরিবারও প্রকাশ্যে জানিয়েছে, তিনি নতুন অধ্যায় শুরু করতে চান। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তার পরবর্তী গন্তব্য এবার কোথায়?
প্রথমে আলোচনায় উঠে আসে চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)-এর নাম। ধোনি-পরবর্তী যুগে একজন অভিজ্ঞ ভারতীয় উইকেটকিপার-ব্যাটার পাওয়া গেলে সেটা চেন্নাইয়ের জন্য সোনায় সোহাগা হতো। তবে এর মধ্যেই নতুন দাবিদার হিসেবে উঠে এসেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)। আর এখানেই জমে উঠেছে আসল নাটক।
কেকেআরের পাল্টা প্রস্তাব
অভিজ্ঞ ভেঙ্কটেশ আইয়ারের নাম অনেকেই ভেবেছিলেন আলোচনায় আসবে। কিন্তু এক জনপ্রিয় সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, কেকেআর দলের তরুণ প্রতিভা অংকৃষ রঘুবংশী বা অলরাউন্ডার রমনদীপ সিংকে সম্ভাব্য ট্রেড চিপ হিসেবে ভাবছে। রঘুবংশী কে এখনও ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ হিসেবে ধরা হচ্ছে, অন্যদিকে রমনদীপের শেষের দিকে ব্যাটিং আর মিডিয়াম পেস বোলিং তাকে টি২০-তে এক দুর্লভ অস্ত্র করে তুলেছে।
তবে সমস্যার জায়গা হল মূল্য। স্যামসন যেখানে ১৮ কোটির ক্যাটাগরিতে, সেখানে রঘুবংশী ও রমনদীপের দাম যথাক্রমে ৩ ও ৪ কোটি। ফলে ট্রেড বাস্তবায়িত হলেও কেকেআরকে মোটা অঙ্কের টাকা গুনতেই হবে।
কেন কেকেআরের দরকার স্যামসনকে?
কেকেআরের দলে সবচেয়ে বড় ঘাটতি হল একজন নির্ভরযোগ্য ভারতীয় উইকেটকিপার। স্যামসন সেই জায়গা পূরণ করলে নাইট রাইডার্স একজন এক্সট্রা বিদেশি পেসার খেলানোর সুযোগ পাবে। ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম সারিতেই তাকে আনা যেতে পারে, যা দলের ভারসাম্য অনেক বাড়িয়ে দেবে।
অন্যদিকে, স্যামসনের জন্য এটি হতে পারে কেরিয়ারের বড় টার্নিং পয়েন্ট। একসময় কেকেআরের সদস্য হয়েও সুযোগ পাননি তিনি। পরে রাজস্থানের হয়ে নিজেকে প্রমাণ করে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকা হয়ে উঠেছেন। যদি তিনি নাইট শিবিরে ফেরেন, তাহলে সেটি হবে ঘরে ফেরা।
তবে বাস্তবতার দিক থেকে দেখতে হয় তাহলে কেকেআরের হাতে রঘুবংশী বা রমনদীপকে ছাড়ার উচিত হবে না! এই দুজনকেই নাইট রাইডার্স ভবিষ্যতের সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলছে। তবে আদৌ এই অদল বদল হয় কি না সেটা দেখার বিষয়।
অন্য দিকে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে ফেরার সম্ভাবনা ক্রমেই ফিকে হচ্ছে রিঙ্কু সিংহের। গত বছর বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা হয়নি তাঁর, নির্বাচক অজিত আগরকর জানিয়েছিলেন দলের ভারসাম্যের কারণেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে টানা ফিনিশারের ভূমিকায় নামা রিঙ্কুর জন্য বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেষ দুই মরশুমে তিনি খুব কম বল খেলার সুযোগ পেয়েছেন—২০২৪ সালে ১১৩ এবং ২০২৫-এ মাত্র ১৩৪ বল। এত কম সুযোগে বড় রান না আসায় জাতীয় দলের দৌড়ে পিছিয়ে গেছেন তিনি। ভারতীয় টপ অর্ডার ইতিমধ্যেই ভরাট—যশস্বী, সূর্যকুমার, সঞ্জু, তিলক, হার্দিকদের সরানো মুশকিল। এমনকি শুভমন গিলকেও দলে ঢোকানো নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রাক্তন নির্বাচকদের মতে, একমাত্র রিঙ্কুর জায়গাতেই বদল সম্ভব। এর সঙ্গে গৌতম গম্ভীরের অলরাউন্ডারপ্রীতি রিঙ্কুর জন্য আরও বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ফলে, আসন্ন এশিয়া কাপে তাঁকে আবারও দলের বাইরে থাকতে হতে পারে।