Vivek Agnihotri: অভিনেত্রীকে নগ্ন হয়ে নাচতে বলা থেকে ইতিহাস বিকৃতি, বিবেক অগ্নিহোত্রীর অনেক রূপ

ইতিহাস বিকৃতি থেকে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য, সাংস্কৃতিক অবমাননা থেকে ভুয়ো তথ্য ছড়ানো – প্রতি ক্ষেত্রেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে বিবেক অগ্নিহোত্রী

August 19, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৩৬: পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর (Vivek Agnihotri) নাম আজ সিনেমা কম, বিতর্কের জন্য বেশি বিখ্যাত। তাঁর প্রতিটি চলচ্চিত্র, রাজনৈতিক অবস্থান, সামাজিক মাধ্যমের বক্তব্য এবং অতীতের আচরণ বারবার তাঁকে সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।

The Bengal Files এবং ইতিহাস বিকৃতির তীব্র অভিযোগ

অগ্নিহোত্রীর আসন্ন ছবি The Bengal Files ইতিমধ্যেই প্রবল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই ছবিতে ১৯৪৬ সালের কলকাতা দাঙ্গার সময় গোপাল মুখোপাধ্যায় তথা গোপাল “পাঁঠা”-কে একজন “মুসলিম বিরোধী কষাই” হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। তবে বাস্তবে গোপাল পাঁঠার নাতি শান্তনু মুখার্জি এই চিত্রণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এটি সম্পূর্ণ ইতিহাস বিকৃতি। তাঁর দাবি, গোপাল মুখোপাধ্যায় বরং সেই দাঙ্গার সময় অনেক নিরীহ মানুষকে রক্ষা করেছিলেন, কিন্তু ছবিতে তাঁকে হিংসার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

মারাঠি খাবারকে অবমাননা

এক সাক্ষাৎকারে অগ্নিহোত্রী মারাঠি খাবার ভারণ ভাতকে “poor people’s food” বলেছিলেন। এই মন্তব্য মারাঠি সংস্কৃতির প্রতি অপমানজনক বলে বিতর্ক শুরু হয় এবং তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। মারাঠি শিল্পী ও সাধারণ মানুষেরা এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান।

বলিউডের সঙ্গে অবিরাম দ্বন্দ্ব

অগ্নিহোত্রী প্রায়ই বলিউডের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে সরব হন। তিনি একাধিকবার পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, কাশ্যপের মদ্যপানের অভ্যাসের কারণে জন আব্রাহাম ও বিপাশা বসুকে নিয়ে তৈরি একটি চলচ্চিত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

সম্প্রতি কোল্ডপ্লে কনসার্টে গায়িকা জসলিন রয়্যালের পারফরম্যান্স নিয়ে তিনি কটাক্ষ করে বলেছিলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তাই তাঁকে মঞ্চে এনেছে, প্রকৃত প্রতিভা নয়। এছাড়াও তিনি বলিউডের কিছু বড় তারকাদের, বিশেষ করে রণবীর কাপুরের সমালোচনা করতে গিয়ে অনেক কুমন্তব্য করেছেন

নারীবিদ্বেষী মন্তব্য

অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধে একাধিকবার নারী বিদ্বেষী মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৮ সালে অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর একজন রাজনীতিবিদকে সমালোচনা করলে অগ্নিহোত্রী টুইট করে একটি আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন, যার ফলে টুইটার তাঁর অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে লক করে দেয়।

২০১৩ সালের একটি পুরনো টুইটে তিনি টাটা ন্যানো গাড়িকে নিয়ে ধর্ষণের প্রসঙ্গে একটি অপ্রীতিকর রসিকতা করেছিলেন, যা এত বছর পরে আবার প্রকাশ্যে এসেছে এবং ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ এসেছে অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তের কাছ থেকে, যিনি দাবি করেছেন যে ২০০৫ সালে Chocolate ছবির শুটিংয়ের সময় অগ্নিহোত্রী তাঁকে নগ্ন হয়ে নাচতে বলেছিলেন, এবং অগ্নিহোত্রী সেই অভিযোগ মেনেও নেন।

ভুল তথ্য প্রচারের অভিযোগ

অগ্নিহোত্রীকে প্রায়ই মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর জন্য সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। তিনি একবার দাবি করেছিলেন যে বিবিসির একটি সমীক্ষায় কংগ্রেসকে “বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত দল” বলা হয়েছে, যদিও এমন কোনো সমীক্ষার অস্তিত্ব নেই।

তিনি কানহাইয়া কুমারের একটি ভুয়ো ভিডিও শেয়ার করে দাবি করেছিলেন যে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, তিনি একবার বলেছিলেন যে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নেহরুর সময়ে হয়েছিল, যদিও নেহরু তখন জীবিতই ছিলেন না। কোভিড মহামারীর সময় তিনি এমনকি দাবি করেছিলেন যে গাঁজা খেলে কোভিড সেরে যায়, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়।

ইতিহাস বিকৃতি থেকে শুরু করে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য, সাংস্কৃতিক অবমাননা থেকে ভুয়ো তথ্য ছড়ানো – প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিবেক অগ্নিহোত্রী নিজেকে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছেন। যতই শিল্পের চামড়া পরে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করুন তিনি, আদপে বিবেক অগ্নিহোত্রী একজন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তি, তা বলাই বাহুল্য।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen