কেন ‘পুশব্যাক’? অন্তঃসত্ত্বা সোনালিকে বাংলাদেশে পাঠানোয় Supreme Court তুলল প্রশ্ন
বাংলায় কথা বললে কেন বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে? এক মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টে এই প্রশ্নগুলোই উঠল।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:১১: আজ, শুক্রবার বাঙালি হেনস্থা ইস্যুতে এবার একাধিক প্রশ্ন উঠল শীর্ষ আদালতে। কেন নাগরিকত্ব যাচাই করা হচ্ছে না? নথি না-দেখে কেন ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে? বাংলায় কথা বললে কেন বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে? এক মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টে এই প্রশ্নগুলোই উঠল। পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের তরফ থেকে করা মামলার ভিত্তি শীর্ষ আদালতে বিচারপতি সূর্যকান্ত, জয়মাল্য বাগচী এবং বিপুল এম পাঞ্চোলির বেঞ্চে ওঠে সেই মামলা।
পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের পক্ষে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। পুশব্যাক ইস্যুতে জোরালো সওয়াল করেন তিনি। উঠে আসে সোনালি বিবির কথা। অভিযোগ, বীরভূমের বাসিন্দা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবি এবং তাঁর পরিবারকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টকে এই সংক্রান্ত মামলা দ্রুত শোনার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।বিচারপতিরা বলেন, ‘‘হাই কোর্টে মামলা শুনতে কোথাও বাধা নেই। আমরা অনুরোধ করছি যত দ্রুত সম্ভব ওই মামলাটি শোনার জন্য।’’
উল্লেখ্য, বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা সোনালি এখন দেশহীন। স্বামী দানিশ শেখ এবং তাঁদের বছর পুত্রসন্তানেরা কয়েক ধরে দিল্লির রোহিণী এলাকার ২৬ সেক্টরে থাকতেন। দিল্লিতে প্রায় দুই দশক ধরে সোনালি ও তাঁর পরিবার কাগজকুড়ুনি এবং গৃহ-পরিচারিকার কাজ করতেন। পরিবারের অভিযোগ, গত ১৮ জুন তাঁদের আটক করে দিল্লির কেএন কাটজু মার্গ থানার পুলিশ। অভিযোগ, সোনালির গোটা পরিবারকেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে সোনালির পরিবারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে বাংলাদেশের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ। সেই সময় আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন সোনালি। সেই অবস্থায় তাঁকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। শুনানিতে প্রশান্ত ভূষণের অভিযোগ, নাগরিক প্রমাণপত্র যাচাই না করে, শুধুমাত্র ভাষার ভিত্তিতে ওই মহিলাকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে। এই মামলায় নোটিশ ইস্যু করা হলেও কেন্দ্র জবাব দেয়নি বলে অভিযোগ উঠছে।
নোটিশের জবাব দেওয়ার বদলে কলকাতা হাইকোর্টে সোনালী বিবির মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়, এই সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন তাই হাইকোর্ট যেন এখন এই মামলা না শোনে। কেন্দ্রের আবেদন মেনে নেয় হাইকোর্ট। মুলতুবি হয় শুনানি। সোনালিকে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা হতেই কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে হেবিয়াস কর্পাস মামলা দায়ের করেছিল পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড। ওই সময়কালে সুপ্রিম কোর্টে একই ধরনের মামলা চলায়, সোনালির মামলা শুনতে রাজি হয় না হাইকোর্ট। কেন্দ্রও এটাকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে। এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর মামলা শুনতে আর কোনও বাধা নেই।