ছাব্বিশে কাঁথি-দার্জিলিংয়ে বাজিমাত কোন পথে, দলীয় নেতাদের বললেন অভিষেক
দার্জিলিং সমতলের জন্য অভিষেকের বার্তা, পাহাড় জিততে হলে বাঙালি অস্মিতায় শান দিতে হবে। আর কাঁথিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে কড়া দল

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২:১৫: আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনের খুঁটিনাটি আতসকাচের নিচে রেখে, সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তা কাটিয়ে উঠতে এখন থেকেই উদ্যোগী রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দার্জিলিং সমতল (শিলিগুড়ি) ও কাঁথি সাংগঠনিক জেলা নিয়ে শনিবার বৈঠক করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। ২০২৪ সালে দুই লোকসভা কেন্দ্রেই হার হয়েছে তৃণমূলের। এই অবস্থায় আজ বৈঠকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে দ্বন্দ্ব ভুলে, প্রচারের অস্ত্র হাতে নিয়ে এগোতে হবে সবাইকে।
দার্জিলিং সমতলের জন্য অভিষেকের বার্তা, পাহাড় জিততে হলে বাঙালি অস্মিতায় শান দিতে হবে। আর কাঁথিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে কড়া দল। অখিল গিরি-উত্তম বারিককে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
এদিন ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যালয়ে প্রথমে দার্জিলিং সমতল সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে আলোচনায় বসেন তিনি। উত্তরবঙ্গে পদ্মশিবিরের প্রভাব এখনও বেশ ভালোই। বিগত নির্বাচনগুলিতে একাধিক আসন গিয়েছিল বিজেপির দখলে। চব্বিশের লোকসভা ভোটে যদিও তার অনেকটা উদ্ধার করেছে ঘাসফুল শিবির। তবে ছাব্বিশকে সামনে রেখে উত্তরবঙ্গের গেরুয়া গড় দুরমুশ করে দিতে মরিয়া তৃণমূল। কীভাবে তা সম্ভব? এদিন দার্জিলিং সমতলের সংগঠনকে অভিষেকের বার্তা, ‘‘জেতার সুযোগ সবসময়েই আছে। সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রচারে নামুন। পুর এলাকার ফলাফল বিধানসভায় ফেরাতেই হবে। তাহলে শিলিগুড়ি জয় সহজ হবে, কাউন্সিলরদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে।” জানানো হয়েছে, শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে তিনটি টাউনের বদলে ৬ টি হবে। অর্থাৎ টাউনের ৩ সংগঠনই দুটো করে ভেঙে দেওয়া হবে।
একমাত্র শিলিগুড়ি পৌরনিগমে ২০২২- এ ঘাসফুল ফুটলেও ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে কোন ওয়ার্ডেই জয়ের মুখ দেখেনি তৃণমূল কংগ্রেস। একদা গৌতম বনাম পাপিয়া দ্বন্দ্ব দুর্বল করেছে শাসক শিবিরকে। সম্প্রতি নিজের দলের কাউন্সিলরদের সঙ্গেই বোর্ড মিটিংয়ে বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন মেয়র গৌতম দেব।যার সুযোগ নিচ্ছে বিরোধী দল বিজেপি। ফলে সংগঠনে বদল আনছে তৃণমূল। পাশাপাশি, বাঙালি অস্মিতাতেও বিশেষ নজর দিতে হবে উত্তরবঙ্গে। বিশেষ নজর দিতে হবে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে। এই কেন্দ্রটি ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের।’’
দ্বিতীয়ার্ধ্বে কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সঙ্গে বৈঠকে বসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি ও কাঁথির তৃণমূল নেতা উত্তম বারিকের মধ্যে চোরা দ্বন্দ্বের কথা জানা শীর্ষ নেতৃত্বের। সেই ‘কাঁটা’ উপড়ে সকলকে একসঙ্গে কাজে করার কড়া বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। সূত্রের খবর, বৈঠকে অখিল গিরিকে সামান্য ধমকও খেতে হয়। তাঁকে অভিষেক বলেন, ‘‘দলের পদাধিকারী ঠিক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবাইকে সঙ্গে নিয়েই আপনাকে চলতে হবে।” অভিযোগ, জেলায় তৃণমূলের দলীয় নেতৃত্বের একাংশের উপরে এখনও অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি কেন্দ্রে হার। খেজুরি, কাঁথি উত্তর ও কাঁথি দক্ষিণ, ভগবানপুর এই চার বিধানসভায় অনেকটা পিছিয়ে শাসক দল। কাঁথি সমবায় ভোটের ফল শাসক শিবিরের পক্ষে এসেছে। এই জেলার সব থেকে বড় সমস্যা অধিকারী পরিবারের একটা ছায়ার সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে।