ডিজিটাল ভারতের ঢক্কানিনাদই সার! GST-র ধাক্কায় ধস ফোন বিক্রিতে
ক্ষমতায় আসার পর দেশবাসীকে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র খোয়াব দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:৫৯: ক্ষমতায় আসার পর দেশবাসীকে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র খোয়াব দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই পথ ধরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রাপ্তি থেকে শুরু করে আর্থিক লেনদেন—প্রায় সব ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন হয়ে উঠেছে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। স্মার্ট ফোন এখন আর বিলাসিতা নয়, একপ্রকার বাধ্যবাধকতা। অথচ সেই মোবাইল ফোনের উপর জিএসটি ১২ থেকে ১৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে বহু মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছে ফোনের দাম। বিক্রি পড়ছে দ্রুত হারে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে মোবাইলের উপর থেকে জিএসটি কমানোর আর্জি জানিয়েছে ‘ইন্ডিয়া সেলুলার অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স অ্যাসোসিয়েশন’।
সংগঠনের কর্তারা জানাচ্ছেন, জিএসটি ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগে দেশে মোবাইল ফোনের উপর এক্সাইজ ডিউটি এবং ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) মিলিয়ে গড় শুল্কের হার ছিল ৬ শতাংশ। কেন্দ্রীয় সরকার সেই সময় দাবি করেছিল, ভ্যাট থেকে জিএসটি জমানায় আসার পর পণ্যের করের হারে বড় কোনও পরিবর্তন হবে না। কিন্তু দেখা যায়, এক্ষেত্রে জিএসটির হার ৫ শতাংশে (কাছাকাছি স্ল্যাব) না রেখে ১২ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তখন ডামাডোলের মধ্যে জিএসটির এই হার মেনে নেয় শিল্পমহল। কিন্তু ২০২০ সালে করের হার পরিবর্তন করা হয় এবং মোবাইলের জিএসটি ১২ থেকে বাড়িয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়। এখনও সেই হার চলছে। শুধু যে মোবাইল সেটের জিএসটি বেড়েছে, তা নয়। ফোনের যন্ত্রাংশেরও উপর করের হারও বেড়েছে। যন্ত্রাংশ ভেদে ১২ থেকে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত কর আরোপিত রয়েছে এখন। সংগঠনের দাবি, সরকার এই দিকগুলি ভেবে দেখুক এবং সেই মতো মোবাইল ফোন ও যন্ত্রাংশের উপর জিএসটির হারে পরিবর্তন আনুক।
অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান পঙ্কজ মহিন্দ্রু বলেন, ‘২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন হয়েছিল ১৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকার। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে তা বেড়ে ৫ লক্ষ ৪৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। গত অর্থবর্ষে ভারত থেকে প্রায় দু’লক্ষ কোটি টাকার মোবাইল ফোন রপ্তানি হয়েছে। কিন্তু স্রেফ চড়া দামের কারণে মার খাচ্ছে দেশীয় বাজারে বিক্রিবাটা।’ হিসেব সামনে এনে পঙ্কজ জানান, প্রায় সমান জনসংখ্যার চীনের অভ্যন্তরীণ বাজারে মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রি একসময় বার্ষিক ৪০ কোটিতে পৌঁছে গিয়েছিল। তা কমে এখন ২৯ কোটিতে নেমেছে ঠিকই। কিন্তু ভারতে ২০২০ সালে ৩০ কোটি মোবাইল বিক্রির হিসেব এখন ২২ কোটিতে নেমে এসেছে।