রুশ তেল কিনে ভারতের লাভ নেই, তবে কাদের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত? মোদীর মন্ত্রীর দাবিতে উঠছে প্রশ্ন
কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি স্পষ্ট জানালেন, রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনে ভারত কোনও আর্থিক সুবিধা পায়নি

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০:৫৪: সস্তায় রুশ তেল (Russian Oil) কেনা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S. Jaishankar) বারবার বলেছেন, দেশের স্বার্থেই এই আমদানি চলছে। তবে এবার প্রশ্ন আরও তীব্র হলো, কারণ কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি (Hardeep Singh Puri) স্পষ্ট জানালেন, রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনে ভারত কোনও আর্থিক সুবিধা পায়নি।
সোমবার দ্য হিন্দু-তে (The Hindu) প্রকাশিত এক নিবন্ধে পুরি দাবি করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ (ukraine war) শুরুর পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম (Oil Price) অস্থির হয়ে পড়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে ভারত রুশ তেল আমদানি করে বিশ্ববাজারকে স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করেছে। তাঁর কথায়, “ভারতের হস্তক্ষেপ না থাকলে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ২০০ ডলার ছুঁতে পারত।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ( America) অভিযোগ, রাশিয়ার (Russia) সঙ্গে তেল বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক (50% US tariff) চাপানো হয়েছে। ওয়াশিংটনের দাবি, পশ্চিমী দেশগুলির নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নয়াদিল্লি রুশ তেল কিনে যাওয়ায় মস্কোর আয় কমেনি, ফলে ইউক্রেন যুদ্ধে তাদের খরচ চালিয়ে যাওয়া সহজ হয়েছে।
তবে পুরি এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, পশ্চিমী দেশগুলির পক্ষ থেকে রুশ তেল কেনার উপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই, বরং মূল্যসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিয়ম মেনেই ভারত রুশ তেল আমদানি করছে এবং এর কোনও সহজ বিকল্পও নেই।
প্রশ্ন উঠছে, যদি ভারতের আর্থিক লাভ না-ই হয়ে থাকে, তবে এই নীতি কতটা যুক্তিযুক্ত? কারণ সস্তায় তেল কেনার সুবিধা দেশের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। বরং লাভবান হয়েছেন মুকেশ আম্বানির (Mukesh Ambani) মতো তেল শোধনকারী সংস্থার মালিকরা।
অন্যদিকে মার্কিন শুল্কের চাপে বিপাকে পড়েছে ভারতের বস্ত্র, পোশাক, রত্ন ও গয়না, চামড়াজাত পণ্য এবং সামুদ্রিক খাবারের মতো রপ্তানিনির্ভর খাত। রপ্তানি কমে যাওয়ায় কয়েক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
ফলে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, রুশ তেল কেনা কি সত্যিই ভারতের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় নেওয়া পদক্ষেপ, নাকি কিছু শিল্পপতির জন্যই এই নীতি কার্যকর হচ্ছে?