সেনার গাড়ি আটক: রাজনীতির রং নয়, আইন ভাঙলে জিরো টলারেন্স – হুঁশিয়ারি ডিসি ট্রাফিকের
ডিসি ট্রাফিক শ্রীকান্ত জগন্নাথরাও বলেন, “সাধারণ মানুষ হলেও একই পদক্ষেপ। রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ি চালানো নিয়ে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে।”

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০:০১: রাইটার্স বিল্ডিংয়ের সামনে সেনাবাহিনীর একটি ট্রাক আটকানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে শহরের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে। সোমবার ধর্মতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের মঞ্চ খোলার ঘটনার পর, মঙ্গলবার সেনার গাড়ি আটকানোয় রাজনৈতিক রং লাগার আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে কলকাতা পুলিশের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এটি নিছকই আইন ভাঙার ঘটনা, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।
কলকাতা পুলিশের দাবি, সেনার ট্রাকটি বিপজ্জনকভাবে চালানো হচ্ছিল এবং তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা ছিল। বিশেষ করে, পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মার গাড়ি ওই ট্রাকের পিছনে থাকায় বিষয়টি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে। যদিও সেনাবাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, পুলিশ তাদের অবস্থানে অনড়।
বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে ডিসি ট্রাফিক শ্রীকান্ত জগন্নাথরাও বলেন, “সাধারণ মানুষ হলেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হত। রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ি চালানো নিয়ে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে।” তিনি জানান, হেয়ার স্ট্রিট থানায় বিষয়টি নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে।
ফুটেজ অনুযায়ী, যেখানে ট্রাকটি ডানদিকে মোড় নিতে গিয়েছিল, সেখানে কোনও রাইট টার্ন সিগন্যাল ছিল না। এই তথ্যকে সামনে রেখেই ডিসি ট্রাফিক জানান, আইন ভাঙার প্রমাণ স্পষ্ট, তাই কেউ যেন রাজনৈতিক রং না লাগান।
ডিসি ট্রাফিক জানিয়েছেন, যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে স্পষ্টভাবে ‘নো রাইট টার্ন’ বোর্ড লাগানো ছিল। ফলে এটি নিঃসন্দেহে লেন ভায়োলেশনের ঘটনা, পাশাপাশি গাড়ির গতিও ছিল বেপরোয়া। সেনাবাহিনীর গাড়িটি ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পাসপোর্ট অফিসের দিকে যাচ্ছিল, এবং সকাল ১১টা নাগাদ সেটিকে থামানো হয়। তবে ডিসি ট্রাফিকের মতে, পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছাতে ওই নির্দিষ্ট রাস্তা ব্যবহার করার প্রয়োজন ছিল না।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, সেনার গাড়িকে সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সম্ভবত চালক তা লক্ষ্য করেননি। এই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পর বিভিন্ন জায়গায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে, এবং সেই প্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সচেতনতামূলক পোস্টও প্রকাশ করা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় পুলিশের পদক্ষেপ নিয়ে কিছু মহল থেকে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তারা স্পষ্ট করেছে যে, এটি একটি আইন লঙ্ঘনের ঘটনা এবং অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে, যাচাই না করা তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে সরকারি সূত্র থেকে পাওয়া নির্ভরযোগ্য তথ্যের ওপর ভরসা রাখতে।