মমতার উপহারেই বিয়ে, রূপশ্রী প্রকল্পে নতুন জীবন শুরু মিতার
মিতার কথায় স্পষ্ট, কন্যাদান আজও অধিকাংশ বাবা-মায়ের কাছে বড় দুশ্চিন্তার বিষয়। তবে রূপশ্রী প্রকল্প সেই দুশ্চিন্তা অনেকটাই লাঘব করেছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:৪৪: বর্ধমানের মঙ্গলকোটের মিতা মাঝি বুধবার বিয়ে করলেন। তবে এই বিয়ে তাঁর কাছে শুধুই ব্যক্তিগত নয়, হয়ে উঠল জীবনের এক বিশেষ স্মৃতি। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া লাল বেনারসি শাড়িতেই বিয়ের আসরে বসেন ‘রূপশ্রী’ মিতা।
গত ২৬ আগস্ট বর্ধমানে সরকারি সভায় মুখ্যমন্ত্রী মিতার হাতে তুলে দেন রূপশ্রী প্রকল্পের পঁচিশ হাজার টাকার চেক, বেনারসি শাড়ি ও বরপক্ষের জন্য ধুতি-পাঞ্জাবি। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা মিতার পক্ষে বিয়ের আয়োজন করা ছিল দুঃসাধ্য। তাঁর বাবা মাছ বিক্রি করেন, মা গৃহিণী। এক ভাই টুকটাক কাজ করে, আরেক ভাই এখনও স্কুলে। অর্থাভাবে কলেজে পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যায় মিতার।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে রূপশ্রীর জন্য আবেদন করেন তাঁর বাবা বাপন মাঝি। আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পরই যেন নতুন আলো নেমে আসে তাঁদের সংসারে। চেক ও উপহার পেয়ে চোখ ভিজে ওঠে মিতার মায়ের। তাঁর কথায়, “দিদি আমাদের মতো গরিব মানুষের পাশে না দাঁড়ালে আমরা ভেসে যেতাম।”
বিয়ের আগের দিন আনন্দ ধরে রাখতে পারেননি মিতাও। বলেছিলেন, “বাবা মাছ বিক্রি করে সংসার চালান। আমাদের দিকে বিক্রি খুব ভালো হয় না। বিয়ের খরচ নিয়ে মা-বাবা খুব চিন্তায় ছিলেন। এই টাকাটা পেয়ে আমাদের ভরসা মিলেছে। দিদি আমাদের মতো মানুষের কাছে ভগবানের মতো।”
মিতার কথায় স্পষ্ট, কন্যাদান আজও অধিকাংশ বাবা-মায়ের কাছে বড় দুশ্চিন্তার বিষয়। তবে রূপশ্রী প্রকল্প সেই দুশ্চিন্তা অনেকটাই লাঘব করেছে। মিতার পরিবার যেমন ভরসা পেয়েছে, তেমনই আরও বহু অভাবী পরিবারও এই প্রকল্পে খুঁজে পেয়েছে নিশ্চিন্ত আশ্রয়।
বুধবার সন্ধ্যায় মন্দিরে সম্পন্ন হয় মিতার বিয়ে। নতুন সংসারের স্বপ্ন নিয়ে হাসিমুখে জীবনযাত্রা শুরু করেন তিনি। বললেন, বিয়ের শাড়িটি যত্ন করে রেখে দেবেন, ভবিষ্যতে সন্তানের কাছে গর্ব করে বলবেন, “এটা আমাদের মুখ্যমন্ত্রী দিদি দিয়েছেন।” মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্পের সহায়তায় অভাবের ঘর থেকেও স্বপ্নের বিয়ে সম্ভব হয়েছে-এটাই যেন আজকের আসল বার্তা।