রোডম্যাপ ছাড়াই জিএসটি হ্রাস! রাজস্ব ঘাটতির ক্ষতিপূরণ কীভাবে? নীরব কেন্দ্র
জিএসটি হারের কাটছাঁটে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসতে চলেছে রাজ্যগুলির রাজস্বে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ৯:০০: জিএসটি হারের কাটছাঁটে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসতে চলেছে রাজ্যগুলির রাজস্বে। কিন্তু সেই ক্ষতির ক্ষতিপূরণ কীভাবে হবে, তার কোনও দিশা দেয়নি জিএসটি কাউন্সিল (GST Council)। বুধবার রাতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণকে (Nirmala Sitharaman) এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি স্পষ্ট কোনও রোডম্যাপ জানাননি। শুধু পশ্চিমবঙ্গেরই লোকসান হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
বর্তমানে রাজ্যগুলি কেন্দ্র থেকে ক্ষতিপূরণ সেস পেয়ে থাকে। তবে সেটি ২০২৬ সালের মার্চেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর কীভাবে ঘাটতি মেটানো হবে, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার (Central Govt) এখনও কোনও ইঙ্গিত দেয়নি। এই পরিস্থিতিতে সেস ও সারচার্জের ভাগ রাজ্যগুলিকে দেওয়ার দাবিতে সরব হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে একাধিক রাজ্য।
বুধবারের বৈঠকে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীরা বারবার ক্ষতিপূরণ সেস প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। দাবি ওঠে, জিএসটি (GST) হ্রাসে নীতিগত আপত্তি না থাকলেও ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া স্পষ্ট না করা হলে রাজ্যগুলির সংকট বাড়বে। কয়েকটি রাজ্য এমনকি ভোটাভুটির দাবি তোলে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মেকানিজম নিয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত কোনও ফর্মুলা জানাতে পারেনি কেন্দ্র।
রাজ্যগুলির অভিযোগ, তারা শুধু সংগৃহীত করের ভাগ পায়। অথচ কেন্দ্র আয় বাড়ায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) লাভ, সরকারি সংস্থা, ব্যাঙ্ক ডিভিডেন্ড ও নানা সারচার্জ-সেস থেকে, যেগুলির কোনও ভাগ রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয় না। অথচ এসব কর আদায় হয় রাজ্যবাসীর থেকেই। তাই রাজ্যগুলির দীর্ঘদিনের দাবি, সেস ও সারচার্জকেও ভাগাভাগির আওতায় আনা হোক।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক চাইছে, রাজ্যের হাতে থাকা মদ ও পেট্রোপণ্যের করও জিএসটির আওতায় আসুক। কিন্তু রাজ্যগুলির কড়া আপত্তিতে বিষয়টি আটকে আছে।
রাজ্য সরকারগুলির আশঙ্কা, ক্ষতিপূরণ বন্ধ করে তাদের কেন্দ্র নির্ভর করে তোলাই উদ্দেশ্য। আগামী অর্থবর্ষে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে, কারণ অক্টোবরে ষোড়শ অর্থ কমিশনের রিপোর্ট পেশ হবে। সেখানে রাজ্যগুলিকে প্রদেয় করের ভাগ ৪১ শতাংশ থেকে বাড়ানো হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। খবর মিলছে, কেন্দ্র চায় না রাজ্যগুলির ভাগ বাড়ুক। অতএব, ভাগ না বাড়লে রাজ্যগুলির ক্ষোভ যেমন তীব্র হবে, তেমনই রাজস্ব ঘাটতির কারণে অর্থনৈতিক সঙ্কটও বাড়তে বাধ্য।