Cess নিয়ে মুখে কুলুপ, রাজ্যগুলোর GST বাবদ ক্ষতিপূরণের সঙ্গত দাবিকে ধামাচাপা দিচ্ছে মোদী সরকার, অভিযোগ তৃণমূল সাংসদের
রাজ্যগুলিকে কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে সেই প্রশ্নটিও রয়ে গেছে। জিএসটি কাউন্সিলের এগারোজন মন্ত্রী ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:২০: বুধবার, জিএসটি কাউন্সিল দ্বিস্তরীয় পণ্য ও পরিষেবা কর কাঠামো ঘোষণা করেছে। নানা পণ্যে উপর জিএসটি কমানো হয়েছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দাবি, পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থার আমুল সংস্কার হয়েছে। কেন্দ্রের এহেন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ব্লগ লিখেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। জিএসটি সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, “এখন হয়েছে। ভাল হয়েছে। না হওয়ার চেয়ে বিলম্বিত হয়ে হওয়া ভাল।”
তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন লেখেন, “২০১৫ সালে সংসদের সিলেক্ট কমিটি পণ্য ও পরিষেবা কর (GST) বিল বিষয়ক রিপোর্টে সুপারিশ করেছিল, কর ১৮ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয় এবং নানাবিধ করের ব্যবহার এড়ানো উচিত।” উল্লেখ্য, ডেরেক উক্ত সিলেক্ট কমিটির সদস্য ছিলেন। ডেরেক আরও বলেন, GST-সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের কমিটির প্রাক্তন চেয়ারপারসন তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ অমিত মিত্রও জিএসটি বিষয়ক কর স্ল্যাব বদলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, কারণ এর সুবিধা আম জনতার কাছে পৌঁছবে।
অমিত মিত্রকে উদ্ধৃত করে ও’ব্রায়েন লিখেছেন, “আরও একটি অ্যান্টি-প্রফিটিয়ারিং কমিটি ছিল যারা নিশ্চিত করেছিল যাতে গ্রাহকদের কম জিএসটির সুবিধা পান। সেই কমিটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, রাজ্যগুলিকে কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে সেই প্রশ্নটিও রয়ে গেছে। জিএসটি কাউন্সিলের এগারোজন মন্ত্রী ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন, তাঁদের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।” ডেরেক আরও লিখছেন, “রাজস্ব সচিব বলেছেন, রাজস্ব ক্ষতি হবে ৪৮,০০০ কোটি টাকা। কিন্তু তিনি সাপ্লাই চেনের কথা বিবেচনা করেননি। যা সহজেই এক লক্ষ কোটি টাকারও বেশি হবে।”
তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতার অভিযোগ, “জিএসটি নিয়ে অনেক কিছু বলা হলেও, কেন্দ্র সেস নিয়ে নীরব।” তাঁর মতে, “জিএসটি নিয়ে এত হইচইয়ের মধ্যে, চার অক্ষরের শব্দ যা ফেডারেলিজমের গলা কেটে দিচ্ছে তা হল সেস। সেস হিসেবে সংগৃহীত তহবিল ১০০ শতাংশ কেন্দ্র সরকারের কাছে যায়। রাজ্য সরকারকে তার থেকে এক টাকাও দেওয়া হয় না।” উল্লেখ্য, ডেরেকের মতে, ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের মোট কর রাজস্বের সাত শতাংশ ছিল সেস। ২০২৫ সালে, সেস কেন্দ্র সরকারের মোট কর রাজস্বের প্রায় ২০ শতাংশ হতে পারে। ২০১৯ সাল থেকে ৫.৭ লক্ষ কোটি টাকা সেস এবং সারচার্জ অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যা নিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোও সরব হয়েছে।
তিনি আরও লিখছেন, রাজ্যগুলি (মোট ২২টি রাজ্য) ১৬তম অর্থ কমিশনের কাছে আদায়কৃত করের বৃহত্তর অংশ পাওয়া জন্য অনুরোধ করেছে। অংশীদারিত্ব ৪১ শতাংশকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুসারে রাজ্যগুলিতে কর হস্তান্তরে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি সত্ত্বেও; কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে দেওয়া করের অংশীদারিত্ব ২০১১ সালে মোট কর রাজস্বের ৮৯ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৭৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে, সেস ৪৬২ শতাংশ (প্রায় দুই লক্ষ কোটি টাকারও বেশি) বৃদ্ধি পেয়েছে।