Trump: ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে কী বললেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়?
ট্যারিফ টানাপড়েনের কারণে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক প্রায় অচলাবস্থায় পৌঁছেছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এই ফাঁকেই বেজিংয়ের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১১:১৬: ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে অস্বস্তি কোনও নতুন বিষয় নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্প প্রশাসনের Tarrif নীতি সেই টানাপড়েনকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। এই অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে মতামত জানালেন নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
NDTV কে দেওয়া একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে এই সিদ্ধান্তে খুব একটা পরিবর্তন আসবে বলে তিনি আশাবাদী নন। তাঁর যুক্তি, এক্সিকিউটিভ অর্ডার সাধারণত আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও বাতিল হয় না, বরং কার্যকরই থেকে যায়। তাই ট্রাম্প যদি নিজে না চান, ট্যারিফ নীতিতে কোনও বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
এই প্রসঙ্গে তিনি আমেরিকার আপিল আদালতের রায়ের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে বেআইনি বললেও, কার্যকরী করার ক্ষেত্রে কোন স্থগিতাদেশ দেয়নি। বরং তারা জানায়, জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতার নামে ট্রাম্প সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করছেন। কিন্তু এর ফলস্বরূপ কোনও বাস্তব পরিবর্তন হয়নি। অভিজিতের ধারণা, সুপ্রিম কোর্টও সম্ভবত এই একই পথে হাঁটবে।
ট্যারিফ টানাপড়েনের কারণে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক প্রায় অচলাবস্থায় পৌঁছেছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এই ফাঁকেই বেজিংয়ের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে। তবে অভিজিতের মতে, আমেরিকা ও চিনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য কাঠামো একেবারেই আলাদা, তাই হঠাৎ করে কোনও দিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন, ভারতকে গুরুত্ব সহকারে ভাবতে হবে RCEP (Regional Comprehensive Economic Partnership)-এ যোগ দেওয়ার বিষয়ে। এই আঞ্চলিক জোটে রয়েছে চিন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও নিউজিল্যান্ড—যেখানে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিরাট সম্ভাবনা আছে। অভিজিতের মতে, ভারতের জন্য এটি কৌশলগতভাবে সঠিক পদক্ষেপ হতে পারে।
ট্রাম্প শুরু থেকেই দাবি করেছিলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি টানতে তাঁর ভূমিকা মুখ্য ছিল। নয়াদিল্লি প্রকাশ্যে সেই দাবি অস্বীকার করেছিল। এর ফলে ট্রাম্পের অসন্তোষ আরও বেড়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অভিজিৎ বলেন, যদি সত্যিই এমন হয়ে থাকে তবে ভারতের হাতে করার মতো তেমন কিছু নেই। আর যদি তা ভুল ব্যাখ্যা হয়ে থাকে, তবে এখনই নতুন কূটনৈতিক কৌশল তৈরি করা জরুরি।
সব মিলিয়ে, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের বার্তায় স্পষ্ট যে, ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক সহজে ঠিক হওয়ার নয়। তবে সুচিন্তিত পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক বাণিজ্যিক জোটে অংশগ্রহণই ভারতকে আগামী দিনে নতুন দিশা দেখাতে পারে।