ট্রাম্পের চাপে মুখে কুলুপ মোদীর, ‘ধৈর্যের কৌশল’ কি নয়াদিল্লির নতুন রণনীতি?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:১৭: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক চাপের মুখে ভারত যেন ‘হাত গুটিয়ে’ বসে রয়েছে। কখনও ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ, কখনও রাশিয়া থেকে তেল কেনার শাস্তি হিসেবে ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো- তবু পাল্টা জবাবে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন মোদী। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, এই সংযত অবস্থানই নয়াদিল্লির কৌশলগত রণনীতি।
কার্নেগি এনডাউমেন্টের ভূ-রাজনীতি বিশ্লেষক অ্যাশলে টেলিস বলেন, “ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করাই ভারতের নতুন কৌশল।” নয়াদিল্লি জনসমক্ষে সমতা বজায় রেখে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের পথ খোলা রেখেছে। ভারতের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানান, দীর্ঘদিনের সম্পর্ক নষ্ট করতে চায় না ভারত।
দেশের মোট চিংড়ি রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ এবং সামুদ্রিক পণ্যের ৩৪ শতাংশের জোগান দেয় অন্ধ্রপ্রদেশ। এর ফলে রাজ্যের বার্ষিক রপ্তানি আয় দাঁড়ায় প্রায় ২১,২৪৬ কোটি। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন শুল্কের কোপে সেই রপ্তানি কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। ভারত-মার্কিন সম্পর্কের অবনতিতে এবং চিংড়ি রপ্তানির উপর ৫৯.৭২ শতাংশ শুল্ক চাপায় অন্ধ্রপ্রদেশে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাতিল হয়েছে অর্ধেক বরাত।
ট্রাম্পের ‘বিশেষ সম্পর্ক’ ও মোদীর ‘প্রতিদান’ বার্তার মাঝেও বাস্তবতায় ফাটল স্পষ্ট। ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার দাবি, ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান, রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে চাপ- সব মিলিয়ে সম্পর্কের অবনতি স্পষ্ট।
ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হওয়ার পর মোদীকে দেখা গেছে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে আগ্রহী। এসসিও (SCO) সম্মেলনে অংশ নিতে সাত বছর পর চীন সফর করেছেন মোদী, যেখানে রাশিয়াও উপস্থিত ছিল।
হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী শীঘ্রই ওয়াশিংটন সফরে যেতে পারেন। মার্কিন প্রতিনিধিদলও আসছে ভারতে। যদিও ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রক এ বিষয়ে মুখ খোলেনি। বিশ্লেষকদের মতে, আপাতত ভারত-মার্কিন সম্পর্কের পুনরুদ্ধার সহজ নয়। মোদীর ‘নীরব কৌশল’ আদৌ সফল হবে কিনা, তা সময়ই বলবে।