দুর্গাপুজোই মমতার জনসংযোগের সেরা মঞ্চ, সাইড লাইনের বাইরে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি

September 26, 2025 | 2 min read
Published by: Ritam

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:২০: পুজো উদ্বোধন থেকে থিম সং রচনা, আর কোনও মুখ্যমন্ত্রী অতীতে এভাবে দুর্গাপুজোর সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকেছেন বলে মনে করতে পারে না বাঙালি। হাজার হাজার পুজো আয়োজন, উদ্বোধন, গোটা দল-সংগঠনকেই যেন মমতা মাঠে নামান দুর্গাপুজো। মমতার দলের নেতা, মন্ত্রী এক একজন কোনও না কোনও পুজোর সঙ্গে যুক্ত, প্রধান উদ্যোক্তা। বাংলার বড় পুজো খুঁজতে বসলেই দেখা যায়, সে পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন মমতার মন্ত্রিসভা কোনও সদস্য। বিগত এক থেকে দেড় দশকে দুর্গাপুজো হয়ে উঠেছে মমতার জনসংযোগের অন্যতম হাতিয়ার। পুজো কার্নিভাল, পাড়ায় পাড়ায় তৃণমূলের বিজয়া সম্মেলনী সবই হয়ে উঠেছে মমতার জনসংযোগের মাধ্যম।

 

পুজোর অনুদান ১০ হাজার থেকে বাড়তে বাড়তে সাত বছরে ১ লক্ষ ১০ হাজার। সাত বছর আগে ২৮ হাজারের মতো পুজো তা পেয়েছিল। এবার তা পৌঁছেছে ৪৫ হাজারে। কলকাতা এবং জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল মিলিয়ে তিন হাজারেরও বেশি পুজো উদ্বোধন করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবই নজির।

 

বাম আমলে পুজোর সঙ্গে এভাবে জড়িয়ে ছিল না সরকার, এমনকি নেতারাও নয়। সুভাষ চক্রবর্তীর মতো কিছু নেতা স্থানীয়স্তরে কিছু পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তা আর কতটুকুই বা ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মমতা সেই শূন্যতা পূরণ করেন। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন কলকাতার কিছু পুজোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেতেন। জেলার পুজোয় শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাতেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে সেটাকেই আরও অনেক বড় পরিসরে উপস্থাপিত করেছেন মমতা। ফি বছর পুজোয় ভেসে যাওয়া বঙ্গে তিনি একাই রাজত্ব করেন। এ বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

 

বিজেপি নেতারা কলকাতা বা জেলার পুজো উদ্বোধনে যাচ্ছেন না, তা নয়। কিন্তু সেই সংখ্যা অতিনগণ্য। কলকাতায় সজল ঘোষ ছাড়া বিজেপির হাতে কোনও বড় পুজো নেই। তৃণমূলের পুজো ভিত্তিক জনসংযোগের ভিড়ে বিজেপি একেবারে উত্তাপহীন, ঔজ্জ্বল্যহীন, শ্রীহীন। ক্ষয় হয়ে যাওয়া বাম-কংগ্রেসের কোনও নেতা যে কোনও একটি পুজোর নিয়ন্ত্রণ তাঁরা হাতে রাখবেন।

 

বাংলায় বুথ সংখ্যা ৮০ হাজারের কিছু বেশি। পুজোর অনুদান পায় ৪৫ হাজার কমিটি। প্রতি এক জোড়া বুথ পিছু একটি কমিটি মমতার সরকারের পুজো অনুদান পাচ্ছে।

পুজো অনুদানের পাশাপাশি পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুতের বিলেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। দমকলের ক্ষেত্রেও মিলছে ছাড়। দুর্গাপুজোর সঙ্গে মিশে গিয়েছে বাঙালি অস্মিতা। ইউনেস্কো বাংলার দুর্গাপুজোকে আবহমান ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে। তার বিপণন করেছেন মমতা ও তাঁর দল। পুজোকে মাসাধিক ব্যাপী উৎসব করে তুলেছে মমতার শাসন আমল। একদিকে জনভিত্তি আদায়, মানুষের কাছাকাছি থাকা অন্যদিকে বিজেপির হিন্দুত্বের অস্ত্রকে ভোঁতা করা, দুই-ই করছেন মমতা পুজোকে মাধ্যম করে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen