জুবিন নেই, তাই নেই পুজোর আনন্দ; অসমে ভেসে বেড়াচ্ছে শোকের সুর

September 27, 2025 | 2 min read
Published by: Ritam

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:১৫: দুর্গাপুজো মানেই আলোর মেলা, ঢাকের তালে উচ্ছ্বাস, আনন্দে ভরপুর চারদিক। কিন্তু এ বছর সেই রঙ, সেই উল্লাস ফিকে হয়ে গেছে অসমে। কারণ, নেই সেই মানুষটি-অসমের আবেগ, প্রাণের শিল্পী জুবিন গর্গ (Zubin Garg)। ৫২ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু যেন উৎসবের মরশুমকে ঢেকে দিয়েছে গভীর অন্ধকারে।

 

তাঁর শেষযাত্রা পরিণত হয়েছিল এক মহাযাত্রায়। অর্জুন ভোগেশ্বর বড়ুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে কামরূপের কামারকুচি শ্মশান পর্যন্ত হাজারো মানুষ ভিড় জমান প্রিয় শিল্পীকে শেষবারের মতো দেখতে। কেউ চোখের জল মুছেছেন গামছায়, কেউ আবার বাইক র‍্যালিতে যুক্ত হয়েছেন শোকযাত্রার সঙ্গী হয়ে। ফুলে সাজানো অ্যাম্বুলেন্স চলার সময় চারদিক মুখর হয়েছিল গান আর স্লোগানে-“মায়াবিনী রাতির বুকুত”, “জয় জুবিনদা”, “জুবিনদা জিন্দাবাদ”। গানের সুর থেমে গেলেও মানুষের হৃদয়ে বাজতে থাকল তাঁর কণ্ঠ। অসম কেঁদে বিদায় দিল তার প্রিয়তম সন্তানকে।

 

১৯৭২ সালে মেঘালয়ের তুরায় জন্ম নেওয়া জুবিন গর্গ চার দশকের কেরিয়ারে গেয়েছেন ৯ হাজারেরও বেশি গান, ৪০টিরও বেশি ভাষায়। ‘ইয়া আলি’ তাঁকে এনে দেয় জাতীয় পরিচিতি। অসমিয়া ও বাংলা ছবিতে গায়ক, সঙ্গীত পরিচালক, প্রযোজক-প্রতিটি ভূমিকায় রেখেছেন সাফল্যের ছাপ। বিতর্ক তাঁকে ছুঁয়েছে, তবু ভক্তদের কাছে তিনি থেকে গেছেন আবেগ আর প্রতীকের জায়গায়। সমাজসেবাতেও রেখেছেন দাগ-পশু বলি বিরোধী আন্দোলনে পেয়েছিলেন PETA-র ‘হিরো’ উপাধি।

 

এই বছর দুর্গাপুজোয় নেই সেই আলো। কাহিলি পাড়ার পুজোর দায়িত্ব ছিল জুবিনের কাঁধে। তাঁর অনুপস্থিতিতে বন্ধ হয়ে গেছে সেই আয়োজন। গৌহাটির বাসিন্দা সঞ্চারী রায়চৌধুরির কথায়, “১৯ সেপ্টেম্বর থেকে কারওর মন ভাল নেই। জুবিন অসমের কাছে ভগবান। দুর্গাপুজো প্রায় বন্ধ। স্থানীয়রা উৎসব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, কেবল কিছু কমিউনিটি পুজো করছে।”

 

ড. ভূপেন হাজারিকার পর অসমকে নতুন সাংস্কৃতিক পরিচয় দিয়েছিলেন যিনি, তিনি আজ আর নেই। কিন্তু তাঁর সুর রয়ে গেছে মানুষের অন্তরে। হয়তো তিনি আর কখনও মঞ্চে উঠবেন না, কিন্তু যখনই বাজবে “মায়াবিনী রাতির বুকুত”, অসমবাসী অনুভব করবে-জুবিনদা আছেন, আছেন তাদের প্রাণের গভীরে, আকাশভরা সুর হয়ে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen