উত্তরের পাশে মমতা: বইয়ের রয়্যালটি থেকে দিলেন ৫ লক্ষ টাকা, এগিয়ে এলেন সাংসদ-মন্ত্রীরাও

October 15, 2025 | 2 min read
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০:৫৩: উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ। বিপর্যয়ের মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গঠিত তহবিলে বই বিক্রির রয়্যালটি থেকে ৫ লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার দার্জিলিঙে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে (Administrative meeting in Darjeeling) তিনি নিজেই এই ঘোষণা করেন। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের ত্রাণ তহবিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত অনুদানের পথেই হাঁটছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা।

বৈঠকে মমতা বলেন, অতীতে ছবি আঁকার আয় থেকে তিনি ১ কোটি টাকা দান করেছিলেন। বর্তমানে রয়্যালটি ছাড়া তাঁর অন্য কোনও ব্যক্তিগত আয় নেই, তাই সেখান থেকেই ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। প্রশাসনের হাতে তিনি চেক তুলে দেন বৈঠকের মধ্যেই।

বুধবার দার্জিলিং থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, তিনি নিজের বইয়ের রয়্যালটি থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দান করছেন। এরপরই তৃণমূলের তরফে নির্দেশ যায় দলের সব মন্ত্রীর কাছে, তাঁদের প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকা করে অনুদান দিতে হবে দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিলে।

এর আগে মঙ্গলবার এক লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার কথা জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhisek Banerjee)। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘অপ্রত্যাশিত বন্যা ও ভূমিধসের ফলে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলাগুলির কিছু অংশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যার ফলে জনজীবন প্রচণ্ড দুর্ভোগের মুখে পড়েছে এবং জীবন, জীবিকা ও সম্পত্তির প্রচণ্ড ক্ষতি হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রেক্ষিতে, রাজ্য সরকার সকলের কাছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (ডব্লিউবিএসএমডিএ) তহবিলে অনুদান দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের তাৎক্ষণিক উদ্ধার, ত্রাণ এবং দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসন প্রচেষ্টায় সহায়তা করা যায়। আমার রাজ্যের জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশ করে, আমি ডব্লিউবিএসএমডিএ এক লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছি।’’

একই পথ অনুসরণ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনিও এক লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য করে X হ্যান্ডেলে লেখেন, “বিন্দু বিন্দুতে সিন্ধু হয়। আপনি যা পারেন, অনুগ্রহ করে সাহায্য করুন: ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি-র তহবিলে।”

এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্য না করলেও রাজ্য সরকার নিজস্ব উদ্যোগে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সেই উদ্দেশ্যে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’-র (West Bengal State Disaster Management Authority) নামে একটি তহবিল চালু করা হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষও সরাসরি অর্থসাহায্য করতে পারেন।

উল্লেখ্য, দার্জিলিঙের চারটি ব্লক ও ৯টি পুরসভায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। উদ্ধারকাজে পুলিশ, প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আইসি, এসপি-রা যেভাবে কাজ করেছেন, তার তুলনা নেই।” সিভিল ডিফেন্স ও কুইক রেসপন্স টিমের সক্রিয় ভূমিকারও তিনি প্রশংসা করেন।

মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, দুধিয়া ব্রিজ ধসে যাওয়ার পরে সাত দিনের মধ্যে একটি অস্থায়ী ব্রিজ তৈরি করা হচ্ছে। মিরিক এলাকায় তিনি নিজে পরিদর্শন করে দেখেছেন, একটি পায়ে হাঁটার ব্রিজ ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে এবং একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen