বহিরাগতদের দৌরাত্ম্যে বিপন্ন স্থানীয় বস্তিবাসীরা! কালীপুজো উদ্বোধনে কাউন্সিলরদের সতর্কবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৭:৪৫: আগামী সোমবার আলোর উৎসব কালীপুজো। তার আগে আজ শুক্রবার থেকেই কলকাতার বড় বড় কালীপুজো মন্ডপগুলি উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গিরিশ পার্ক ফাইভ স্টার স্পোর্টিং ক্লাবের কালীপুজোর উদ্বোধনে এসে সবাইকে উৎসবের শুভেচ্ছা জানালেন তিনি। এর সঙ্গে মমতার অভিযোগ, বাইরের লোকজন এলাকায় প্রবেশ করে একের পর এক বহুতল নির্মাণ করছে, যার ফলে স্থানীয় বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ হতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি স্থানীয় কাউন্সিলরদের কঠোর নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিন মমতা বলেন, “আমি কাউন্সিলরদের বলছিলাম, কেন বস্তিগুলোকে তুলে সব ‘বাংলার বাড়ি’ করে দিচ্ছ না কেন? সেটাই তো ভালো হবে। কেউ বাইরে থেকে এসে একটা বাড়ি তৈরি করছে আর বস্তির ২০০ জনকে তাড়িয়ে দেবে, তা কী করে হয়? ওরা কি মানুষ নয়? তারা যে গরিব, সেটা তো দোষের নয়। তাই কাউন্সিলরদের বলছি, এই বিষয়টা নজরে রাখতে হবে। বহিরাগতরা এসে যেন বস্তিবাসীকে উচ্ছেদ করতে না পারে।”
মমতার সংযোজন, ‘‘আমি আমার কাউন্সিলরদের বকছিলাম। সেই অধিকার আমার আছে। আমি তাঁদের বলছিলাম, তোমরা কেন বস্তিগুলি তুলে বাংলার বাড়ি করছ না? বস্তিগুলিতে গরিব মানুষদের থাকাটা অপরাধ নয়। কিন্তু কেউ ওই জমি কিনে নিল, আর গরিব মানুষদের তাড়িয়ে দিল? এটা ঠিক নয়। গরিব মানুষদের যেন কেউ জোর করে কেউ সরিয়ে দিতে না পারে, কাউন্সিলরদের এটা দেখা উচিত।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘বহিরাগত বলতে আমি একটা রাজনৈতিক দলকে বলেছি, যাঁরা বাইরের লোক নিয়ে এসে এখানে আমাদের ভোটারদের নামের পাশে নাম তোলেন। আমাদের এখানকার ভোটারেরা যাতে ভোট দিতে না-পারেন, সেই জন্য এমন করে তাঁরা।’’
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্বেগ নতুন নয়। গত সোমবার উত্তরবঙ্গ সফর শেষে ভবানীপুরের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি সরব হন। তাঁর অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে ভবানীপুরে বহিরাগতদের আনিয়ে এলাকায় বড় বড় বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে, যার ফলে গরিব মানুষের বস্তি উচ্ছেদ হচ্ছে। তিনি এই প্রবণতার বিরোধিতা করে জানান, বাইরের লোকজন দিয়ে এই কাজগুলো পরিকল্পনা করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যার ফলে স্থানীয় ভোটারদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর মতে, যারা বাংলায় বসবাস করেন এবং কাজ করেন তারাই প্রকৃত অর্থে এই রাজ্যের মানুষ। গরিবদের পাশে দাঁড়ানোকে তিনি মানবিক দায়িত্ব বলে মনে করেন।