আপনার ফোনে নজরদারি চালাচ্ছে বিজেপি? পদ্ম নেতার মন্তব্যে বিতর্ক

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ৯.২৫: মহারাষ্ট্রের বিজেপি (BJP) নেতা ও রাজ্যের রাজস্বমন্ত্রী চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে (Chandrashekhar Bawankule) একপ্রকার স্বীকার করে নিয়েছেন যে প্রত্যেকের ফোনে নজরদারি চালাচ্ছে পদ্ম শিবির। বৃহস্পতিবার ভান্ডারা জেলায় বিজেপির এক কর্মসূচিতে তিনি বলেন, আসন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটের আগে “সবার মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) গ্রুপ পর্যবেক্ষণের আওতায় রয়েছে।” তাঁর কথায়, “আপনার মুখ থেকে বেরোনো প্রতিটি শব্দ, আপনার ফোনে চাপা প্রতিটি বোতাম নজরে রাখা হচ্ছে। একটি ভুল বার্তা আগামী পাঁচ বছর ধ্বংস করে দিতে পারে।”
এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই বিরোধী দলগুলি আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপির উদ্দেশ্যে। শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) [ShivSena UBT] শিবির বিজেপি নেতার মন্তব্যকে সরাসরি ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও আইনের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে। শিবসেনা বাওয়ানকুলের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে অভিযোগ করেছে, শুধু বিজেপি কর্মীদের নয়, বিরোধী নেতাদেরও একইভাবে নজরদারির আওতায় রাখা হচ্ছে।
চাপ বাড়তেই শুক্রবার বাওয়ানকুল স্পষ্টীকরণ দেন যে, তিনি নাকি বলতে চেয়েছিলেন যে, দলীয় কর্মীদের মন্তব্য দলীয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, বাইরের কেউ নয়। কিন্তু সেই ব্যাখ্যায় বিতর্ক থামেনি। বরং প্রশ্ন উঠেছে, একটি রাজনৈতিক দল যদি নিজের কর্মীদের কথাবার্তা এমনভাবে নজরদারিতে রাখে, তাহলে সাধারণ নাগরিকের গোপনীয়তা কতটা সুরক্ষিত?
উল্লেখ্য, এর আগে মোদী সরকারের আমলেই দেশজুড়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল পেগাসাস স্পাইওয়্যার (Pegasus Spyware) কাণ্ডকে ঘিরে, যেখানে সাংবাদিক, বিরোধী নেতা, বিচারপতি ও মানবাধিকার কর্মীদের ফোনে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছিল। এখন আবার সেই পুরনো আশঙ্কাই যেন নতুন করে ফিরে এসেছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি আজ ক্ষমতার নেশায় এতই মত্ত যে, নাগরিকের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার একে-একে বলি হয়ে যাচ্ছে নজরদারির রাজনীতির যুপকাষ্ঠে। গণতন্ত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার, আর বিজেপির এই ‘বিগ ব্রাদার’ সংস্কৃতি শুধু ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে না, বরং পুরো দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকেই বিপন্ন করছে।