হাম কিসিসে কম নেহি! ভারতীয় কন্যাদের বিশ্বজয়

November 3, 2025 | 2 min read
Published by: Raj

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি,০০.০৫: অনেকটা কমিউনিজমের মতো। সমাজে ডাক্তারের ছেলে ও মুচির ছেলের একই স্টেটাস হওয়া উচিত। কিন্তু হয় কি? আসলে ঔচিত্য ও বাস্তবের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আর এই দূরত্ব ঘুচিয়ে দিলেন হরমনপ্রীত কাউর-জেমাইমা রডরিগেজরা। রবিবার নভি মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে তাঁদের প্রতিপক্ষ শুধুই দক্ষিণ আফ্রিকা নয়, পুরুষশাসিত সমাজও। এখনও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে কন্যাসন্তান জন্ম নিলে মাকে দোষারোপ করা হয়। এরকম অজস্র উদাহরণ আছে। তবে রিচা ঘোষ-স্মৃতি মান্ধনারা যাবতীয় ব্যবধান মুছে ফেললেন। নতুন ইতিহাস রচনা করলেন। প্রজন্মের কাছে তাঁরা রিংটোন সেট করলেন, ‘হাম কিসিসে কম নেহি’।

ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে রোববারের সেই মুহূর্তটা হয়তো আজীবন মনে থাকবে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল মাত্র ৭৯ রান, হাতে ছিল ৫৪ বল। ক্রিজে ছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক লরা উলভর্ট—যিনি একাই তখন ভারতের আশা ধ্বংস করার মতো অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু অমানজোত কৌরের হাতে ধরা পড়া সেই ক্যাচ বদলে দেয় গোটা খেলার গল্প।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস তখন ১৪৮/৫, তবু ম্যাচে ফিরতে পারত তারা। কারণ তাদের ব্যাটিং লাইনআপ ছিল গভীর ও শক্তিশালী। আগের ম্যাচে, সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩১৯ রান তুলেছিল তারা, যেখানে উলভর্ট একাই করেছিলেন ১৬৯। কিন্তু এবার ভাগ্য সহায় হয়নি।

ডি ওয়াই পাটিলের সেই ৪২তম ওভারেই ভারতের জয় নিশ্চিত হয়। দীপ্তি শর্মার বল উলভর্টকে ধোঁকা দেয়, আর অমানজোতের অসাধারণ ফিল্ডিং ধরে রাখে ভারতের আশা। মুহূর্তটিই হয়ে ওঠে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। উলভর্টের আউটের পর পরই চোলে ট্রায়নকেও হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। নাদিন দে ক্লার্ক যতই চেষ্টা করুন, ম্যাচ তখন ভারতের মুঠোয়।

২৯৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও দক্ষিণ আফ্রিকা লড়াই করেছিল সাহসিকতার সঙ্গে। কিন্তু উলভর্টের আউট মানেই ছিল ভারতের জয়ের ঘণ্টাধ্বনি। অমানজোতের হাতে সেই ক্যাচ শুধু এক ব্যাটারকে ফেরায়নি, ফিরিয়েছে নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে ভারতের গৌরবময় অধ্যায়।

এই জয় শুধু এক ম্যাচের নয়—এটা ছিল অপেক্ষার অবসান, লড়াইয়ের ফসল, আর বিশ্বাসের জয়। ভারত নারী দল প্রথমবারের মতো জিতল বিশ্বকাপ—আর সেই গল্পের কেন্দ্রে চিরকাল থাকবে একটি নাম—অমানজোত কৌর।

২০০৫, ২০১৭। দু’বার অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়েছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ট্রফি। দু’বারই ফাইনালে উঠে হারতে হয়েছিল ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলকে। তার মধ্যে ২০১৭ সালে লর্ডসের সেই ফাইনালে ভারতীয় দলে ছিলেন হরমনপ্রীত কউর। তিনিই আজ ভারতের অধিনায়ক। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়া, ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়ে রানার্স আপ হওয়ার পর এ বার নিয়ে তৃতীয়বার বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেছে ভারত। ২০২২সালে কমনওয়েলথ গেমসের সোনার ম্যাচে অজিদের কাছে হেরে গিয়েছিল ভারত। ফলে সেমিফাইনালে ভারত কিন্তু এবার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে একপ্রকার প্রতিশোধই নিয়েছিল। আর রবিবার হল স্বপ্ন পূরণ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen