Sheikh Hasina Verdict: ৩৯৭ দিনের বিচার, ৫ অভিযোগে দোষী হাসিনা, কারা কী বললেন ট্রাইবুনালে?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:২০: ৩৯৭ দিনের দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার শেষে সোমবার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল (International Criminal Tribunal) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে (Sheikh Hasina) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। গত বছরের আগস্টে তাঁর সরকারের পতনের পর যে ট্রাইবুনাল পুনর্গঠিত হয়েছিল, সেই একই আদালতেই চলেছে এই বিচার। হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশজুড়ে (Bangladesh) বিভিন্ন থানায় মোট ৫৮৬টি মামলা রুজু হয়েছিল।
এই মামলায় হাসিনার পাশাপাশি অভিযুক্ত ছিলেন দুই প্রাক্তন শীর্ষ আধিকারিক। একজন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, অন্যজন প্রাক্তন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক। সূত্রের খবর, দু’জনই ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। মামুনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি পরে রাজসাক্ষী হন এবং রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগের পক্ষে জবানবন্দি দেন।
প্রসিকিউশনের তরফে হাসিনাদের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ আনা হয়েছিল:
১. উস্কানিমূলক ভাষণ
২. প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশ
৩. রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা
৪. ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা
৫. আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে খুন
২০২৪ সালের বিচার প্রক্রিয়া:
• ৫ আগস্ট: শেখ হাসিনার সরকারের পতন। এরপরই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল পুনর্গঠিত হয়।
• ১৭ অক্টোবর: হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলার কার্যক্রম শুরু। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি।
২০২৫ সালের বিচার প্রক্রিয়া:
• ১৬ মার্চ: মামুনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিযুক্ত করা হয়।
• ১২ মে: তদন্ত রিপোর্ট জমা। আসাদুজ্জামানের নাম প্রথম অন্তর্ভুক্ত।
• ১ জুন: তিনজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল।
• ১০ জুলাই: অভিযোগ গঠন। মামুন রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন জানায়।
• ৩ আগস্ট: প্রসিকিউশনের বক্তব্যে বিচার শুরু। প্রথম সাক্ষী আহত আন্দোলনকারী খোকনচন্দ্র বর্মন জবানবন্দি দেন।
• ৮ অক্টোবর: সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ। মোট ৫৪ জন সাক্ষীর বয়ান। এর মধ্যে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও।
• ১২ অক্টোবর: সওয়াল-জবাব শুরু।
• ২৩ অক্টোবর: বাদী-বিবাদী পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ।
• ১৩ নভেম্বর: রায় ঘোষণার দিন জানায় ট্রাইবুনাল।
• ১৭ নভেম্বর: আদালতের রায়। শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড।
২০১০ সালের ২৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ-সংক্রান্ত অপরাধের বিচার করতে এই ট্রাইবুনাল গঠন করেছিল শেখ হাসিনার সরকার (Sheikh Hasina’s government)। পরে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ২০১২ সালে আরও একটি ট্রাইবুনাল তৈরি হয়। ২০২৪ সালে তাঁর সরকারের পতনের পর এই প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠিত হয়। সেই পুনর্গঠিত আদালতেই শেষ পর্যন্ত তাঁর বিচার হয়। সোমবার তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।