আজ মার্গশীর্ষ অমাবস্যা, এই তিথিতেই পূজিতা হন খড়িয়পের শ্মশানকালী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:০৫: আজ অগ্রহায়ণ মাসের অমাবস্যা অর্থাৎ মার্গশীর্ষ অমাবস্যা, এই তিথিতে পূজিতা হন হাওড়ার আমতার খড়িয়পের শ্মশানকালী। জনশ্রুতি আছে, স্বপ্নাদেশে শুরু হয়েছিল খড়িয়পের শ্মশানকালীর পুজো। খড়িয়পের জমিদার বৈদ্যনাথ বসু স্বপ্নে দেবী কালীর রূপ দর্শন করেছিলেন। এই বসু পরিবারেই স্বামী বিবেকানন্দের এক বোনের বিয়ে হয়েছিল।
স্বপ্নে যে রূপে দেবী দর্শন হয়েছিল, সেভাবেই মায়ের মূর্তি তৈরি করিয়েছিলেন জমিদার বৈদনাথ বসু। সেই রূপেই দেবীর আরাধনা শুরু হয়েছিল। বংশপরম্পরায় এই পুজো হয়ে আসছে। দেবী দ্বিভুজা। উলঙ্গ শিবের উপর তিনি বিরাজ করেন। দেবীর গাত্রবর্ণ গাঢ় নীল। দেবীর এক হাতে থাকে নরমুণ্ড এবং অন্য হাতে থাকে কারণ পাত্র। দুই সহচরী ডাকিনী ও যোগিনী সহ অবস্থান করেন তিনি। অগ্ৰহায়ণের অমাবস্যায় এখন খড়িয়পের বারোয়ারী শ্মশান কালী পুজো কমিটি এই পুজোর আয়োজন করে।

কথিত আছে, প্রত্য ২০০ বছর আগে হাওড়ার আমতার খড়িয়প গ্রামে মহামারি শুরু হয়। মড়ক লাগে। উদ্ধার পেতে গ্রামবাসীরা দেবী মহামায়ার প্রার্থনা করতে শুরু করেন। বসু পরিবারে বৈদ্যনাথ বসুকে স্বপ্নাদেশ দেন দেবী। শ্মশান কালী রূপে তাঁর আরাধনা করতে বলেন। স্বপ্নে দেবী জানিয়ে দেন, অগ্রহায়ণ মাসের মার্গশীর্ষ অমাবস্যায় দেবীর পুজো করতে হবে। দেবী খড়িয়প গ্রামকে চিরকাল রক্ষা করবেন। তখন থেকে খড়িয়প গ্রামে শ্মশান কালীর পুজো শুরু হয়। আজও বংশ পরম্পরায় এই পুজো করে আসছেন তদানিন্তন সময়ের ব্রাহ্মণ ও প্রতিমা নির্মাণ শিল্পীরা। তবে এখন আর পারিবারিক পুজো হিসাবে আটকে নেই। ১৯৮০ সাল থেকে সর্বজনীনভাবে খড়িয়প গ্রামে দেবী শ্মশান কালীর আরাধনা চলেছে।
স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী শ্মশান কালীর ধ্যান মন্ত্রে পুজো হয়। সারারাত ধরে পুজো চলে। পুজোর পরদিন রাতে পার্শ্ববর্তী পুকুরে দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তি নিরঞ্জন করা করা হয়। পুজো উপলক্ষ্যে মেলা বসে। পুজোকে কেন্দ্র করে ১০ দিনের মেলা বসে। হিন্দু, মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। শ্মশানকালীর পুজোকে কেন্দ্র করে মেতে ওঠে খড়িয়প গ্ৰাম।