“SIR বাংলা বিরোধী, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা”, কমিশন ও BJP-কে একযোগে তোপ অভিষেকের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:০০: এসআইআর (SIR) ইস্যুতে ফের সরব হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সোমবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এক সাংগঠনিক বৈঠকে প্রায় ২৫ হাজার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকেই একযোগে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) এবং বিজেপিকে (BJP) একযোগে তোপ দাগেন তিনি।
অভিষেক বলেন, “মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এসআইআর বাংলা বিরোধী।” তাঁর অভিযোগ, “বিজেপির সহকারী সংস্থা হিসাবে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। যেভাবে জোর করে বাংলায় এসআইআর করা হচ্ছে, তাতে একমাসের কম সময়ে ৩৫ জনকে হারিয়েছি। বিজেপির দম্ভ, ঔদ্ধত্য, অহংকারের জন্যেই এই ঘটনা।” তিনি আরও দাবি করেন, “ইতিমধ্যে তিনজন বিএলও আত্মঘাতী হয়েছেন। কমিশনকে তাঁদের পরিবার দায়ী করেছে। অনেকেই অসুস্থ। আর এই কারণেই বলেছিলাম, এসআইআর বাংলা বিরোধী। মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”
ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ জানান, এই অবস্থায় সাধ্যমতো মানুষের পাশে থাকবেন তিনি। একই সঙ্গে ঘোষণা করেন, আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটরক্ষা শিবির চলবে। তাঁর কথায়, “যতদিন না চূড়ান্ত তালিকা বেরোয়, ততদিন এই শিবির চলবে।” বিহারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “বিহারে কত মানুষ পোলিং স্টেশনে গিয়ে দেখেছেন তাঁদের তালিকায় নাম নেই। কিন্তু ড্রাফ্ট রোলে নাম ছিল। এরপরেও কেটে দিয়েছে।” তবে বাংলায় তৃণমূল (TMC) এই চুরি ধরে ফেলবে বলেই হুঁশিয়ারি দেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, “মানুষ এঁদের শাস্তি দেবে।”
বৈঠকে উপস্থিত নেতৃত্বকে আত্মতুষ্টি এড়াতে সতর্ক করেন তিনি। ‘দিদির দূত’ (Didir Doot) অ্যাপের মাধ্যমে বিএলএদের (BLA) কাজের উপর নজরদারি চলছে বলেও জানান। অভিষেক বলেন, “আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। সেই কারণেই ভোটরক্ষা শিবির। অনেক জায়গায় ভালো কাজ হচ্ছে। ‘দিদির দূত’ অ্যাপ থেকে সেটা আমি দেখি। কোথায় কোন বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েত প্রতিনিধি, দলের কাজে সময় দিচ্ছে সেটা বলে দিতে পারি। সকলের সামনে সেটা বলব। আগেও বলেছিলাম। আবারও বলছি, ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করার পর যে তথ্য সামনে আসবে তাতে ১০০% ফর্ম সাবমিট করতে হবে। প্রত্যেক BLA ২-কে বলতে হবে। প্রত্যেককে এটা বাস্তবায়িত করতে হবে। এটা আপনাদের কর্তব্য দায়বদ্ধতা।”
ক্লেম অ্যান্ড অবজেকশন পিরিয়ডে (claim and objection period) কারও নথি নিয়ে সমস্যা হলে বুথ প্রতিনিধি-সহ নেতৃত্বকে পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। ড্রাফ্ট রোল প্রকাশের পর ইচ্ছাকৃতভাবে কারও নাম বাদ গেলে তাতেও মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বিধায়কদের উদ্দেশে অভিষেক বলেন, “কয়েকটা দিন হাতে আছে। এক্ষেত্রে কোথাও কোনও ঘাটতি থাকলে চলবে না। লড়াইয়ের মানসিকতাই আমাদের পুঁজি।”
বিধায়কদের উদ্দেশে তাঁর আরও বার্তা, “প্রত্যেক বিধায়ককে বলছি। একটা বিধানসভা কেন্দ্রে ১০ টা করে বুথ আছে। প্রত্যেকদিন ভিডিও কলে উৎসাহ দিন, সক্রিয় করুন। দরকারে বাড়ি যান। এই ১০ টা দিন চলে গেলে আর ফিরবে না। BLA ২-কে ফোন করে উৎসাহ দিন, কেমন আছেন, খেয়েছেন কি না, সব জিজ্ঞেস করুন। রাজ্যসভার ১৩ এমপি পঞ্চায়েত স্তরে সুপারভাইজ করছেন। ৩৩০০টি গ্রাম, ৩০০০ শহরের তালিকা আমি তৈরি করে দেব। প্রতিদিন ফোন করবেন। ব্লক স্তরের উপরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের ফোন করবেন।”