তৃণমূলের লাগাতার আন্দোলনের জের, বাংলায় একশো দিনের কাজ শুরুর ফাইলে সই মন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১১:১৫: অবশেষে নতি স্বীকার করল মোদী সরকার! সূত্রের খবর, দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে বাংলার ১০০ দিনের কাজ শুরুর ফাইলে সই করলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। বিগত তিন বছরের বঞ্চনা, টানাপোড়েন, বাংলার শাসক দলের লাগাতার আন্দোলন, দিল্লি অবধি তা পৌঁছে দেওয়া এবং হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর অবশেষে বাংলায় শুরু হচ্ছে একশো দিনের কাজ।
গত ১৮ জুন কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ১ আগস্ট থেকে বাংলায় মনরেগার কাজ শুরু করতে হবে। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যায় মোদী সরকার। সুপ্রিম কোর্ট গত ২৭ অক্টোবর কেন্দ্রের আবেদন খারিজ করে দেয়। বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে বলে, ‘মামলা কি প্রত্যাহার করবেন, নাকি খারিজ করে দেব?’ মামলা খারিজ হয়ে যায়। হাইকোর্ট ফের জানিয়ে দেয়, কেন্দ্রের অধিকার নেই ১০০ দিনের কাজ আটকে রাখার। এরপর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। সূত্রের খবর, অনুমোদন মিলেছে। সেই মতো মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ফাইলে সই করেছেন।
দুর্নীতির অভিযোগে বাংলায় ২০২২ সালের ৯ মার্চ থেকে ১০০ দিনের কাজে টাকা দেওয়া বন্ধ করেছে কেন্দ্র। এরপরই আন্দোলনে নামে রাজ্যের শাসক দল। তাদের সাফ দাবি, কেউ দুর্নীতি করলে শাস্তি দিক, বাকিদের কাজের সুযোগ যেন কেড়ে নেওয়া না হয়। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ দিল্লি অবধি এই আন্দোলনকে নিয়ে গিয়েছেন। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি বারবার চিঠি দিয়েছেন। তারপরও একশো দিনের কাজ আটকানোর মরিয়া চেষ্টা করেছে কেন্দ্র। তাতেও শেষ রক্ষা হল না।
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। কাজ বন্ধ রেখে দিলে, বঞ্চনাকে হাতিয়ার করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চরমে নিয়ে যেত তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটের প্রচারে বিজেপিরও প্রান্তিক মানুষদের মুখোমুখি হওয়ার উপায় থাকত না। উত্তাল হত শীতকালীন অধিবেশন। সেই মতো পরিকল্পনা নিচ্ছিল তৃণমূল। তাই রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকে এবং ভোট রাজনীতির হাওয়ায় বাধ্য হয়ে মোদী সরকার একশো দিনের কাজ চালু করতে চলেছে বঙ্গে।