সোনালিকে ফেরাতে রাজি কেন্দ্র, কবে দেশে ফিরবেন তাঁরা?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১২:০০: অবশেষে মানবিকতার খাতিরে সোনালিকে ফেরাতে রাজি হল কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারি নিয়ম মেনে সোনালিদের দেশে ফেরানো হবে, বুধবার এ’কথাই সুপ্রিম কোর্টে জানালেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। বাংলাদেশ আদালত সোনালিকে মুক্তি দিয়েছেন। আজ, বুধবারই কি সীমান্ত পেরিয়ে ফিরবেন তাঁরা? সেই প্রশ্ন উঠছে।
কথা না-শুনে জোর করে সন্দেহের বশে ডিপোর্ট করে দেওয়া হয়েছিল। দেশে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছে ভারতের শীর্ষ আদালত, বাংলাদেশের আদালতও জামিন দিয়েছে। কেন্দ্র সরকারের কাছে তাঁর কাতর আর্জি, “যত দ্রুত সম্ভব ভারতে ফেরানো হোক। আমার সন্তান যেন ভারতে জন্মগ্রহণ করে।” পাশে থাকার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান সোনালি। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলামকেও তিনি ধন্যবাদ দিচ্ছেন।
সোনালি খাতুনের আর্জি, তিনি গর্ভবতী। তাঁদের তাড়াতাড়ি দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক। সোনালির কথায়, “আমরা কী অপরাধ করেছি যে, আমাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। ভারত সরকারকে হাত জোড় করে অনুরোধ করছি, তাড়াতাড়ি আমাদের দেশে ফেরান। আমি ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা।”
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে ফারুক আলির বাড়িতে আছেন তাঁরা। ফারুক আলির দায়িত্বে, হেপাজতে আছেন। বিষয়টি পর্যবক্ষণ করছেন জুডিশিয়াল কোর্টের অ্যাডভোকেট শরিফ এনায়েতুল্লাহ এবং স্থানীয় ব্যক্তি মিনাজ ইসলাম। সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদালত সোনালিদের জামিন দেয়। সোমবার বাড়িতে খাওয়াদাওয়ার পর রাতে থানায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার সকালে বাড়ি ফিরে আসেন। সবাই এখন ভাল আছেন বলে জানা যাচ্ছে। এখন দেখার কবে ফেরেন সোনালিরা। সোনালিকে অবিলম্বে যাবতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।
সোনালি খাতুনদের কেবক দ্রুত দেশে ফেরানোই নয় পাশাপাশি বীরভূমে তাঁর বাবার বাড়িতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত। কেন্দ্রীয় সলিসিটর জেনারেল বলেন, বাংলাদেশ থেকে সোনালিকে প্রথমে দিল্লিতে নিয়ে আসা হবে। তিনি ভারতীয় কি না, তা যাচাই করে দেখা হবে। এরপর কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি সোনালির নাগরিকত্ব সংক্রান্ত পরিচয় নিয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপে যথেষ্ট বিরক্তি প্রকাশ করেন। প্রশ্ন বলেন, “ভারতের নাগরিকত্বের যে নিয়ম রয়েছে সেই অনুযায়ী তো আপনারা কাজ করেননি।” কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা আপনাদের কাজে বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু আপনাদের পদ্ধতি ঠিক নেই।”
সোনালির যাবতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকে নজর দেওয়ার কথাও জানিয়েছে আদালত। দেশে ফিরিয়ে আনার পরে মানবিক কারণে সব রকম চিকিৎসার সুবিধা দিতে হবে সোনালিকে। তিন চিকিৎসকের দল চিকিৎসা করবে। বীরভূমের চিফ মেডিকেল অফিসারকে সোনালির চিকিৎসার যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে রাজ্য সরকারকে, নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। বাংলাদেশে থাকা বাকি চারজনকে দেশে ফেরানো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে আদালতে। আগামী ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি হবে।