‘আর কোনও দিন দিল্লি যাব না’, দেশে ফিরে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন সোনালি

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:৩০: “ফিরে এলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ।” দীর্ঘ আইনি লড়াই আর সীমান্তের ওপারে জেল খাটার যন্ত্রণার পর অবশেষে স্বদেশে ফিরে এই ভাষাতেই নিজের স্বস্তি প্রকাশ করলেন সোনালি বিবি। শুক্রবার মালদহ সীমান্ত দিয়ে নাবালক পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তিনি। দেশের মাটিতে পা রেখেই কৃতজ্ঞতা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামকে।
দিল্লির স্মৃতি এখন সোনালি বিবির কাছে এক দুঃস্বপ্ন। সেই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি স্পষ্ট জানালেন, “বাংলাদেশে অনেক কষ্টে ছিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টাকা পাঠিয়ে ছিলেন। তবে বাংলাদেশ পুলিশ কোনও অত্যাচার করেনি। আর কোনও দিন দিল্লি যাব না।” সোনালি জানান, তিনি যখন বাংলাদেশের জেলে বন্দি ছিলেন, তখন কঠিন সময়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। ওপার বাংলায় থাকাকালীনই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর কাছে অর্থ সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।
সোনালি বিবির এই ফিরে আসার পথ অবশ্য সহজ ছিল না। অভিযোগ, দিল্লি পুলিশ ও বিএসএফ তাঁকে এবং তাঁর আত্মীয় সুইটি বিবিকে জোর করে ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে রাতের অন্ধকারে ওপার বাংলায় ‘পুশব্যাক’ করে। অন্তঃসত্ত্বা সোনালি ও তাঁর পরিবার বারবার পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে অনুনয়-বিনয় করলেও কেউ তাঁদের কথায় কর্ণপাত করেনি। গভীর রাতে জঙ্গলের মধ্যে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পরেই তাঁদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। উচ্চ আদালত সোনালি ও তাঁর পরিবারকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় সরকার। তবে শীর্ষ আদালতও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে এবং সোনালিকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশের ফলেই শুক্রবার ঘরে ফিরলেন সোনালি ও তাঁর সন্তান। সোনালি বলেন , ‘আর কোনও দিন দিল্লি যাব না। দিল্লি পুলিশ যা করেছে, অমানবিক। আমরা অনেক অনুরোধ করেছিলাম। তার পরেও BSF-কে দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিল।’
সোনালি বিবি ফিরলেও, তাঁর স্বামী এবং সুইটি বিবি ও তাঁর পরিবার এখনও বাংলাদেশে (Bangladesh) আটকে রয়েছেন। তাঁদের কবে বা কীভাবে দেশে ফেরানো হবে, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government) সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় কেবল ‘মানবিকতার খাতিরে’ তাঁকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে, পুশব্যাক করা বাকিদেরও ফিরিয়ে আনা হবে। কেন্দ্র কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছে, পুশব্যাক করার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, তা তারা স্বীকার করছে না।