দেশ বিভাগে ফিরে যান

ভ্যাকসিন পরীক্ষা কেন্দ্রের তালিকায় আবার ব্রাত্য বাংলা

November 18, 2020 | 2 min read

ছবি: ফাইল চিত্র

রাজ্যে করোনা ভাইরাস হানা দেওয়ার পরে আট মাস পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সিটিআইআইয়ের (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া) তথ্যপঞ্জিতে কোনও ভ্যাকসিনেরই পরীক্ষা কেন্দ্র হিসাবে বঙ্গের কোনও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নাম নেই। এই মুহূর্তে সারা দেশে দশটি রাজ্য এবং দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনের গবেষণা চলছে। সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের নাম নেই কেন, বছর শেষে সেটাই এখন গবেষক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব জুড়ে দেড়শোরও বেশি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। এ দেশে এখনও পর্যন্ত সেই তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে কোভ্যাক্সিন (ভারত বায়োটেক ও আইসিএমআর) এবং কোভিশিল্ড (অক্সফোর্ড ও সিরাম ইনস্টিটিউট অব পুনে)। সিটিআরআইয়ের(ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া) তথ্য অনুযায়ী, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, বিহার, তেলঙ্গনা, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, এমনকি গোয়ার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানকে সেই গবেষণার পরীক্ষাকেন্দ্র (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সাইট) হিসাবে বাছা হলেও শিঁকে ছেড়েনি পশ্চিমবঙ্গের। এ রাজ্যের গবেষকদের একাংশের প্রশ্ন, বঙ্গে কি এমন কোনও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে ভ্যাকসিনের গবেষণার কাজ হতে পারে?

ভ্যাকসিন-গবেষক মহলের খবর, কোভ্যাক্সিন বা কোভিশিল্ড না হলেও রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ভি’র দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের সঙ্গে এতদিনে রাজ্যের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। ঘটনাচক্রে তা আর হয়ে ওঠেনি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ‘স্পুটনিক ভি’র দ্বিতীয় পর্যায়ের গবেষণার জন্য ভারতে ডক্টর রেড্ডির সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে রাশিয়ার ভ্যাকসিন প্রস্তুতাকারী সংস্থা। সেই গবেষণার জন্য দেশ জুড়ে সাতটি ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সাইটে’র মধ্যে এ রাজ্যের সাগর দত্ত হাসপাতালের নাম রয়েছে। মাস দেড়েক আগে বিষয়টি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। কিন্তু স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতি পেতে দেরি হওয়ায় দ্বিতীয় পর্যায়ের গবেষণার সঙ্গে সরকারি কোভিড হাসপাতালকে যুক্ত করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এ রাজ্যে সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রক্রিয়ার সেতুবন্ধনকারী সংস্থা হিসাবে কাজ করা বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক প্রধান স্নেহেন্দু কোনার বলেন, ‘‘ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশে স্পুটনিক ভি’র দ্বিতীয় পর্যায়ের গবেষণা শুরু হয়ে যাবে। ওই সময়ের মধ্যে এথিক্স কমিটির অনুমতি জোগাড় করে সাগর দত্তকে দ্বিতীয় পর্যায়ের গবেষণার সঙ্গে যুক্ত করার সবরকম চেষ্টা হচ্ছে।’’ কিন্তু বিষয়টি এমন জায়গায় রয়েছে তাতে সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর। 

বস্তুত, সে জন্য বিকল্প হিসাবে পঞ্চসায়র থানা এলাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতালকে দ্বিতীয় পর্যায়ের গবেষণা কেন্দ্রের জন্য বাছা হয়েছে বলে খবর। যদিও তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিশেষজ্ঞ তথা চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক বলেন, ‘‘এখন ফাইজ়ার, মডার্নার ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য যে ধরনের পরিকাঠামো প্রয়োজন তার নিরিখে আমাদের দেশে দেশীয় ভ্যাকসিনের সাফল্যের উপরে জোর দিতে হবে।’’ বঙ্গে কোভিড ভ্যাকসিনের পরীক্ষা-কেন্দ্র হওয়ার মতো পরিকাঠামোর অভাব নেই বলে বক্তব্য আইসিএমআর-নাইসেড অধিকর্ত্রী শান্তা দত্তেরও। তিনি বলেন, ‘‘ভ্যাকসিন গবেষণায় আমাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। কোভ্যাক্সিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সাইট এখানে হোক সেটা আমরাও চাইছি। এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দেখা যাক কী হয়!’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#COVID2019

আরো দেখুন