বড়দিনের কেক থেকে নলেন গুড়ের পিঠে, এক ফোনেই হোম ডেলিভারি পঞ্চায়েত দপ্তরের
সকালের কফি আর দুপুরের কমলালেবু ফিরিয়ে এনেছে শীতের বেলা। কোভিড (COVID-19) পর্বেই কেটে গিয়েছে আট আটটা মাস। বিকেল গড়ালেই আলসেমি জাঁকিয়ে বসছে। জিম করবেটের গল্পের সঙ্গে আরও এক কাপ কফি কিংবা কমলার ঝুড়িটা কেউ এগিয়ে দিলেই হয়। কিংবা সন্ধ্যায় নলেন গুড়ের গরম পিঠে বা পাটিসাপটা! তাই দেবে। সঙ্গে কেক, চকোলেটও থাকবে। বড়দিনকে সামনে রেখে সে ব্যবস্থাই করছে পঞ্চায়েত দপ্তর। কেক, পিঠে, চকোলেটের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের কমলা, স্ট্রবেরির সম্ভারে প্ল্যাটার সাজিয়ে শীতের আলসেমি আরও মজাবে তারা। সঙ্গে উইকএন্ডে নানা পদের সম্ভার। ফোন তুলে একটা অর্ডারের যা অপেক্ষা। কিংবা ছোট্ট একটা হোয়াটসঅ্যাপ।
পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীন কম্প্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন বা CADC এই পরিষেবা দিচ্ছে। শুধু আজ নয়, পুজোর মরশুম থেকেই নানা পদের খাবার মিলেছে তাদের ওয়েবসাইটে অর্ডার করে। মাঝ ডিসেম্বর থেকে তাদের অ্যাপ চালু হয়ে যাওয়ার কথা। বাকি অন্য অ্যাপ নির্ভর খাবার ডেলিভারি সংস্থার মতোই তখন আরও সহজে কাজটা হবে। তবে ইতিমধ্যেই ব্যাপক সাড়া মিলেছে ওয়েবসাইট, ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ বুকিংয়ে। দপ্তরের বিশেষ সচিব সৌম্যজিৎ দাস জানাচ্ছেন, “সপ্তাহান্তে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের একটু বাড়ি বসে যত্নের খাবার পেলে ভাল লাগে। আমরা যে উদ্যোগটা নিয়েছি তাতে পেট তো খুশি হবেই। সঙ্গে মনেরও আরাম।”
একধিক অ্যাপ নির্ভর খাবার ডেলিভারি সংস্থা অনেক আগে থেকেই এই কাজটা করছে। তার সঙ্গে এর তফাত কী? তাদের ছেড়ে কেউ সরকারি একটা দপ্তরের এমন পরিষেবা চেখে দেখতে যাবেন এটা ভাবার কারণ কী? “কাউকে ছোট না করেই বলি, বাঙালির প্রিয় কাঁটা চচ্চড়ি, একটু হাঁসের কলজে, কোরমা, কোয়েল পাখির ডিম কষার মতো মা ঠাকুমার হেঁশেলের রান্নাটা যদি কষ্ট না করে ঘরে বসে মেলে, সে সুযোগ কি কেউ নেবে না? না কি এসব জিনিস আজকাল খুব সহজে মেলে?” পাল্টা প্রশ্ন বিশেষ সচিবের।
কলকাতায় বসে এই পরিষেবা মিলবে আপাতত এয়ারপোর্ট থেকে গড়িয়া, অন্যদিকে, বাইপাস সংলগ্ন এলাকা থেকে একেবারে নবান্ন লাগোয়া এলাকায়। শুধু কলকাতাই নয়, ভাইফোঁটার অর্ডার এসেছে সুদূর কানাডা, সিঙ্গাপুর থেকেও। এই পরিকল্পনার মার্কেটিং কো অর্ডিনেটর স্বাগতা রায় জানাচ্ছেন, “দিদি বিদেশে থাকেন। ফোনে বা হোয়াটসঅ্যাপে কলকাতায় তাঁর ভাইয়ের জন্য ভাইফোঁটার খাবার অর্ডার করেছিলেন। একটা নয়, এমন বেশ কিছু অর্ডার আমরা পেয়েছি একসঙ্গে। নিজেদের গাড়ি করে তা পৌঁছেও দিয়ে এসেছি।” ৯০০৭১৯৪১০৮, ৯১৬৩১২৩৫৫৬, ৯১৬৩৩১২৮০৮ এই নম্বরে ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ করলেই মিলবে মনপসন্দ খানা। সঙ্গে এবার উপরি পাওনা বড়দিনের কেক! প্ল্যাটারের দাম মোটামুটিভাবে ৫০০ টাকার মধ্যে ধরা হচ্ছে। খাবারের এই বিপুল আয়োজন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাই করেন। পেশাদারি ঢংয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিশেষ সুস্বাদু রান্না পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে সিএডিসি।